মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নিজেদের কারখানা স্থাপনের জন্য শিল্প পার্ক গড়তে যে জমি সরকারের কাছ থেকে নিচ্ছে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, ওই জমির মূল্য পরিশোধে চীন সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। জমির মূল্য বাবদ চীন সরকারের কাছ থেকে ৭৮০ কোটি টাকা অনুদান এনে দেওয়ার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিনকে অনুরোধ করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।
শিল্প পার্কটি স্থাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি এক সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকার জমি অধিগ্রহণ করে বিজিএমইএকে দেবে। জমির অধিগ্রহণ মূল্য ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ব্যয় বিজিএমইএ বহন করবে। মূলত বিজিএমইএর যেসব সদস্য ওই পল্লীর প্লট নেবে, তারাই প্লটের দাম পরিশোধ করবে। এ ক্ষেত্রে বেপজা সরকারের পক্ষে রেগুলেটরি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
চীনের কাছ থেকে ৭৮০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে গত ১৩ এপ্রিল বাণিজ্যমন্ত্রী ও ইআরডি সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ৪৯২ একর জমি অধিগ্রহণ করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা মানহীন (নন-কমপ্লায়ান্ট) পোশাক মালিকদের কাছে নেই। বিদেশি দুই-একটি সংস্থা অর্থায়নে এগিয়ে এলেও নানা শর্তের কারণে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রস্তাবিত শিল্প পার্কটি গড়ে তোলা হবে মূলত নন-কমপ্লায়ান্ট পোশাক কারখানার জন্য। কিন্তু এসব কারখানার মালিকরা এ অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না। এতে করে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের প্রাক্কলিত ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না বিজিএমইএ। জমি অধিগ্রহণে অর্থ সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে চীন। তবে দেশটি বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব চেয়েছে। তাই চীন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠাতে বাণিজ্যমন্ত্রী ও ইআরডি সচিবকে অনুরোধ জানান তিনি।
জানা গেছে, রাজধানীসহ আশপাশে যেসব পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ ভালো নয়, সেসব কারখানা সবার আগে প্রস্তাবিত শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হবে। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসন এরই মধ্যে গজারিয়া উপজেলায় বাউশিয়া, মধ্যম বাউশিয়া, পোরার চর, চৌদ্দকাহনিয়া এবং কাইচখালী মৌজায় শিল্প পার্ক স্থাপনের জন্য ৪৯২ একর জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে এবং একই সঙ্গে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৭৮০ কোটি টাকা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য বিজিএমইএকে অনুরোধ জানিয়েছে।