পূর্ব ইউরোপে টহলদারি বাড়াবে ন্যাটো

পূর্ব ইউরোপে টহলদারি বাড়াবে ন্যাটো

0,,16294574_303,00ন্যাটোর মহাসচিব রাসমুসেন বলেছেন,‘‘আমরা বিভিন্ন সামরিক পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।’ বুধবার আন্তঃ-অতলান্তিক জোটের ২৮ জন সদস্যের একটি বৈঠকের পর তিনি একথা বলেন ৷

‘রিভিউড অ্যান্ড রিইনফোর্স্ড’, মানে পুনর্বিবেচনাই শুধু নয়, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা প্রণালী আরো জোরদার করা হচ্ছে৷ কোথায় নতুন করে সেনা নিয়োগ করা হচ্ছে এবং কি ধরনের সেনা, সে বিষয়ে রাসমুসেন কিছু বলতে অস্বীকার করেন৷ তবে তিনি এটুকু জানান যে, ন্যাটোর নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী বালটিক দেশগুলির উপর ন্যাটোর উড়াল বাড়বে৷ এছাড়া বালটিক সমুদ্রে ও ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে অতিরিক্ত জাহাজ পাঠানো হবে৷ এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়িত করা হবে এবং আগামীতে আরো এ’ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, বলে রাসমুসেন জানান৷

জেনেভায় বৃহস্পতিবার ইইউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের আলাপ-আলোচনার উপর ন্যাটোর এই সিদ্ধান্তের কি প্রভাব পড়বে, রিপোর্টাররা তা জানতে চাইলে রাসমুসেন বলেন: ‘‘আমরা কিছু সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছি, যা প্রতিপক্ষকে নিরস্ত করার জন্য প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি৷” যুগপৎ, ‘‘অগ্রসর হবার একমাত্র পন্থা হল রাজনৈতিক সমাধান, বলে আমরা মনে করি৷”

এদিকে, পূর্ব ইউরোপ থেকে যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক কূটনীতির সম্পর্কটা কিছুটা ক্ষীণ , বলে মনে হতে পারে৷ দোনিয়েৎস্ক-এ ডজন-ডজন রাশিয়া-সমর্থক মুখোশধারী কালাশনিকভ হাতে পৌর ভবনটি দখল করেছে৷ পুলিশ তাঁদের কোনোরকম বাধা দেয়নি৷ দখলকারীরা ইউক্রেনীয় সংসদের কাছে থেকে স্থানীয় গণভোট সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে৷

নয়ত পূর্ব ইউক্রেনে ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং রাশিয়া-সমর্থক জঙ্গিরা পারস্পরিকভাবে শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে চলেছে৷ অন্তত দু’টি শহরের পথে সাঁজোয়া গাড়ি দেখা গেছে৷ মিলিটারি কামোফ্লেজ ইউনিফর্ম পরা মানুষের অভাব নেই৷ রুশ মিডিয়া থেকে বেশ কিছু ইউক্রেনীয় সৈন্যের দলত্যাগ করে রাশিয়া সমর্থকদের সাথে যোগ দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ অপরদিকে স্লাভিয়ানস্ক এবং ক্রামাটর্স্ক, উভয় শহরের উপর দিয়েই ইইক্রেনীয় জঙ্গিজেট ঘুরতে দেখা গেছে৷ ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আর্সেনি ইয়াৎসেনিয়ুক মস্কোর বিরুদ্ধে একটি ‘‘নতুন বার্লিন প্রাকার” সৃষ্টির প্রচেষ্টার অভিযোগ করেছেন৷

ইউক্রেন সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার ফলে রুশ অর্থনীতি এ বছরের প্রথম তিন মাসে একটা বড় রকমের হোঁচট খেয়েছে, অর্থাৎ অপ্রত্যাশিতরকম মন্থর হয়ে পড়েছে – যার মূল কারণ: বিনিয়োগকারীরা দেশ থেকে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছেন৷ ২০১৪ সালের প্রথম কোয়ার্টারে রুশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র শূন্য দশমিক আট শতাংশ, বলে রুশ সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আলেক্সেই উলিউকায়েভ, যদিও তাঁর মন্ত্রণালয়ের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল আড়াই শতাংশ৷

সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবারের জেনেভা বৈঠক যদি কোনো যুগান্তকারী পরিবর্তন না আনতে পারে, তাহলে চার কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের সুবৃহৎ দেশটির ঐতিহাসিক রুশ-ইউক্রেনীয় সাংস্কৃতিক বিভাজন অনুযায়ী খণ্ডিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে৷

আন্তর্জাতিক শীর্ষ খবর