বিএনপির ‘নিখোঁজ’ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে জীবিত/মৃত খুঁজে দিতে পারলে সন্ধানদাতাকে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে রাজধানীর বিভিন্ন দেয়ালে পোষ্টার লাগানো হয়েছে। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ এর দুই বছর পরও আশা ছাড়েনি তার পরিবার।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে গাড়িচালকসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসূত্রে জানা যায়, মাইক্রোবাস ও জিপ নিয়ে আসা একদল লোক ওই দুজনকে ধরে নিয়ে গেছে। গত দুই বছরে তদন্তে পাওয়া এটুকু তথ্যই গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
নিখোঁজ হওয়ার পরে ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর বনানী থানায় একটি জিডি করেছেন। সেই জিডির তদন্ত চলছে এখনো। উচ্চ আদালত ৪৮ ঘণ্টা পরপর ইলিয়াস আলী নিখোঁজের বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশকে। একই প্রতিবেদন কয়েক দিন পরপর ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দাখিল করছেন বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাইনুল ইসলাম।
প্রকাশিত সংবাদসূত্রে জানা যায়, প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা গাড়ির বিবরণ, ওই দিন সিলেট থেকে ফেরার পরে ইলিয়াসের কর্মকাণ্ডের বিবরণী, রূপসী বাংলা হোটেলে ইলিয়াস যাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তার বিবরণী, ইলিয়াসের বাসার বর্ণনা ইত্যাদিই ঘুরেফিরে এসেছে বারবার। এখন পর্যন্ত ৩৬টি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে তার সহায়তা চেয়েছিলেন, কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।
নিখোঁজ হওয়ার দুই বছরের মাথায় এসে ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বাধীন সিলেট জেলা কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। তাতে ইলিয়াসের স্ত্রীকে সদস্য করা হয়েছে।
ইলিয়াস আলীকে সর্বশেষ দেখা রূপসী বাংলা হোটেলের সিসি-টিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করে নানা তথ্যের গুজব এবং তার মোবাইল খোলা পাওয়ার দাবি নিয়ে নানাসময় নানা ধোয়াশা তৈরি হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারে নানাসময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে, সিলেট সীমান্তে এবং গাজীপুরের কিছু এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছিল। বিএনপিও বিভিন্ন সময় নানা আলটিমেটাম, হরতাল এবং অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের দাবিতে।
প্রসঙ্গত, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পেছনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। অন্যদিকে এ অভিযোগ জোড়ালোভাবে অস্বীকার করে আসছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।