শনিবার গ্রানাডার কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে লা লিগার শিরোপা দৌঁড়ে সবাইকে হতাশ করেছে বার্সেলোনা। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
আলেজেরিয়ান ইয়াসিন ব্রাহিমি ১৬ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন। কিন্তু গোলবারে গ্রানাডার উজ্জীবিত গোলরক্ষক ওরেসটিস কারনেজিসের দক্ষতায় ম্যাচে আর ফিরে আসতে পারেনি কাতালানরা। বুধবার চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনারে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নেয়া বার্সেলোনার জন্য এই পরাজয় দারুন হতাশা হয়েই আসলো। রিয়াল মাদ্রিদ এবং এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে এখন লা লিগায় বার্সেলোনার অবস্থান তৃতীয়। অপর দিকে সানতিয়াগো বার্নাব্যুতে আলমেরিয়ারর বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয় তুলে নিয়ে নিজেদের শিরোপার অন্যতম শক্তিশালী দাবীদার হিসেবে এখনো টিকিয়ে রেখেছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। ম্যাচে চারটি গোল করেছেন যথাক্রমে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, গ্যারেথ বেল, ইসকো এবং আলভারো মোরাতা। ১৮ বছরের মধ্যে প্রথম লা লিগার শিরোপা অর্জনে এ্যাথলেটিকোর এখন তাদের বাকি ছয়টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতলেই চলবে।
ম্যাচ শেষে হতাশ বার্সা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ক্যানাল প্লাস চ্যানেলে বলেছেন, এটা আমাদেরকে একধাপ পিছিয়ে দিল। পুরো ম্যাচে মাত্র একটি সুযোগই তারা পেয়েছিল এবং তা কাজে লাগিয়েছে। যদিও তা আটকাতে আমরা সব চেষ্টাই করেছিলাম। এই মুহূর্তে পরাজিত হওয়ার পরে কিছু বলাটা সত্যিই কঠিন। আমরা শুধুমাত্র গোলই পাইনি, কিন্তু পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রন আমাদের কাছেই ছিল। এই ধরনের দলগুলো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই মাঠে নামে, আর তাতে একটি সুযোগ কাজে লাগানোই যথেষ্ট। ম্যাচটিতে আমাদের জেতা উচিৎ ছিল। গোলের জন্য আমরা সবকিছুই করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আদায় করতে পারিনি, এটাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।
বার্সা বস জেরার্ডো মার্টিনও ইনিয়েস্তার সাথে একই মত প্রকাশ করে বলেছেন তিনি তার খেলোয়াড়দের কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছেনা। গোলে ২৯টি প্রচেষ্টা খেলোয়াড়রা চালিয়েছে এবং ৮০ শতাংশ বল পজিশন বার্সেলোনার দখলেই ছিল।
এ্যাথলেটিকোর ম্যাচের থেকে চারটি পরিবর্তন করে মার্টিনো গতকাল তার দল সাজিয়েছিলেন। ফুল ব্যাকে আদ্রিয়ানো এবং মার্টিন মোনটোয়ার সাথে মিডফিল্ডে জেভিয়ার মাসচেরানো এবং সার্জিও বাসকোয়েট কিছুটা উপরে উঠে খেলেছেন। বার্সেলোনার রক্ষানভাগের সেই অবিন্যস্ততার সুযোগেই গ্রানাডা গোলের দেখা পায়। বাসকোয়েটকে কাটিয়ে ব্রাহিমি হোসে ম্যানুয়েল পিন্টোকে জোড়ালো শটে পরাস্ত করতে ভুল করেননি। এরপর মোনটোয়ার ক্রসে নেইমার হেডের সুযোগ নষ্ট করেন, এছাড়া তার কার্লিং শট দূর্দান্তভাবে রক্ষা করেন গ্রীক গোলরক্ষক।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরোটাই ছিল বার্সেলোনা বনাম কারনেজিসের গল্প। লো ভলির সাহায্যে প্রথম চেষ্টাটা নষ্ট করেন সেস ফ্যাব্রেগাস। এরপর নেইমার প্রায় সমতা ফিরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু অল্পের জন্য তার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। লিয়নেল মেসির দারুন একটি ফ্রি-কিক কর্ণারের মাধ্যমে এবং বাসকোয়েটের প্রচেষ্টা দুটি রক্ষা করা ছিল কারনেজিসের সবচেয়ে সফল দুটি চেষ্টা।
তবে বার্সেলোনা না পারলেও আলমেরিয়ার বিপক্ষে একচেটিয়া জয় তুলে নিয়েছে রিয়াল। যদিও দলে ছিলেন না তারকা উইঙ্গার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ২৮ মিনিটের ডি মারিয়ার গোল দিয়ে শুরু। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫২, ৫৫ ও ৮৪ মিনিটে বেল, ইসকো ও মোরাতা গোল করলে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল।