জাটকা ইলিশ রক্ষার্থে মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মেঘনা নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১শ’ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের অভয়াশ্রমে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে। এছাড়াও জুন মাস পর্যন্ত জাটকা ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এ সময় জাটকা ইলিশ নিধন বন্ধ রাখতে জেলেদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিরতণ করছে সরকার। এ বছর মার্চ-জুন (৪ মাস) মেঘনায় মাছ শিকারি লক্ষ্মীপুরের প্রায় ২৬ হাজার জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র মতে, এ বছর সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৯০০ জেলে, রায়পুরে ৬ হাজার, রামগতিতে ৮ হাজার ৮০০ ও কমলনগর উপজেলার ৭ হাজার ২৪৭ জেলেসহ মোট ২৫ হাজার ৯৪৭ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। মার্চ-জুন চার মাস রেজিস্টার্ডকৃত প্রতি জেলে পরিবারের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা বাবদ চাল বরাদ্দ রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতি জেলে পরিবারের মাঝে ৪০ কেজি করে মার্চ মাসের ৪ হাজার ১৫১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট এলাকায় এ চাল বিতরণ শুরু হয়। এ সময় স্থানীয় চর রমনীমোহন ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউছুপ ছৈয়াল, সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। তবে ওইদিন বিতরণকৃত চাল ওজনে ৪-৫ কেজি কম দেয়ার অভিযোগ করেছে কয়েক জেলে।
এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, জেলেদের চাল বিতরণের সময় ওজনে কম দিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, গত দেড় মাসে নদীতে ১৪০টি অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ লাখ মিটার জাল জব্দ। এবং দুই মেট্রিকটন জাটকা ইলিশসহ সাড়ে ৫ মেট্রিক টন মাছ জব্দ ও দুই জনের ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত বছর জেলায় ২৩ হাজার ৫৮৮ জন জেলেকে ৩০ কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এবার প্রায় ২৬ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। জেলেদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ ও নদীতে ব্যাপক অভিযানের ফলে এবার রেকর্ডসংখ্যক পরিপূর্ণ ইলিশ উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।