গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনের ওয়েস্টমিন্সটার হলে যে সভা করেছেন সে হলের ভাড়া পরিশোধ নিয়ে গুরুতর আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ অনুমতি ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির অন্য এক সিনিয়র নেতার ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে বড় অংকের হল ভাড়া পরিশোধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐ নেতার ব্যাংক কার্ডের তথ্য কীভাবে কয়ছর আহমদের কাছে গেল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে এক বিরাট রহস্য। ঐ বিএনপি নেতা ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে জানান, বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন এবং সেটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি পুলিশের তদন্তাধীন থাকায় এ নেতার নাম প্রকাশ করা গেল না।
৭ এপ্রিল যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিক সমাজের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। চার শতাধিক অতিথির এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান।
ব্যাংক কার্ডের মালিক ঐ বিএনপি নেতা বলেন, পুলিশের তদন্তাধীন থাকায় বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। কে কীভাবে কী পরিমাণ অর্থ হল ভাড়া পরিশোধ করেছে এমন প্রশ্নের জবাব দিতেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন যে, এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে এবং তিনি নিজে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। তদন্তের পর রহস্য উদঘাটিত হলে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলবেন।
যোগাযোগ করা হলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস এ বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করলেও তার কথায় বড় রকমের অসংগতি ধরা পড়েছে। কে হলের ভাড়া পরিশোধ করেছে তার সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভাড়া পরিশোধ করেছি। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তিনি এবং সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদ হলের ভাড়া পরিশোধ করেছেন। কার্ডের পিন নাম্বার কে টিপেছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদ তা করেছেন। কিন্তু এ কার্ডটি কার ছিল? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা হলের ভাড়া ক্যাশ (নগদ) পরিশোধ করেছি।
তিনি দাবি করেন, হলের ভাড়া বাবদ ৭ হাজার পাউন্ডের কিছু বেশি অর্থ তারা ক্যাশ পরিশোধ করেছেন। তবে হলের প্রকৃত ভাড়া কত তা তিনি ভুলে গেছেন বলে দাবি করেন। যুক্তরাজ্যে সাত হাজার পাউন্ড (প্রায় ৯ লাখ টাকা) নগদ বহন করা অস্বাভাবিক। ওয়েস্টমিন্সটার হলের মত মূলধারার কোনো প্রতিষ্ঠানে এই পরিমাণ অর্থের নগদ লেনদেন প্রায় অসম্ভব। একসাথে এত অর্থ ব্যাংকে জমা দিতে গেলেও ব্যাংক অর্থের উত্স জানতে চায়।
যুক্তরাজ্য বিএনপির অন্য এক সিনিয়র নেতাও এ অর্থ জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদের মোবাইলে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। কল ব্যাক করার অনুরোধ জানিয়ে রাখা কণ্ঠ বার্তারও কোনো জবাব আসেনি।