একদিন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে সিলেট রয়্যালসের ইনিংস শেষ হয়েছিলো ১২৪ রানে। অত ছোট স্কোর না করলেও মাত্র একরান বেশি করেছে বলিশাল বার্নার্স। তারা ওই রান করেছে চিটাগং কিংসের বিপরীতে।
ক্রিস গেইল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেখানে বিশাল বিশাল ছয় মারেন, সেই বরিশালের এই দশা! তাও গেইল খেলেছেন। যতক্ষণ ক্যারিবিয়ান সাইক্লোন মাঠে ছিলেন ততক্ষণ রানের ফোয়ারা ছুটেছে। ১৬ বলে ৩০ রান। যারমধ্যে দুটি চার এবং তিনটি ছয়ও ছিলো। বরিশালের সংগ্রহ তখন ৩৫ রান। গেইল রান নিতে গেলে ডান কুঁচকিতে টান পড়ে। আম্পায়ারের অনুমতি নিয়ে ম্যাচ থেকে অবসরে যান। খানিকটা বাদেই আরাফাত সানির বলে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন আহমেদ শেহজাদ। পরে ব্রাড হজ অনেক কষ্টে ৪০ বলে ৩৮ রান যোগ করেন। ওই দলের পক্ষে ১২৫ রানের বেশি করা প্রায় অসম্ভব ব্যপার।
‘উইনিং স্প্রিটে’ থাকা চিটাগং কিংস খুব সহজেই টার্গেট পূরণ করে। ১২.৪ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান করে। তাদের ওপেনার নাসির জামশেদ অপরাজিত থাকলেন ৮১ রানে। আরেক ওপেনার জহুরুল ইসলাম ২১ বলে করেন ৪১ রান। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতে কিংস এখন পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে। বরিশালের জয় দুটিতে। সেমিফাইনালে খেলতে হলে তাদেরকে আরও অনেকগুলো ম্যাচ জিততে হবে। তাদের অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফিস মনে করেন, ‘পয়েন্ট দেখলে আমরা চার নম্বরে। এপর্যন্ত আমরা তিনটা ম্যাচ হেরেছি। অবস্থাটা খুব স্বস্তিদায়ক নয়। সামনে যে পাঁচটা ম্যাচ আছে, কম করে হলেও দুইটা এবং বেশি হলে তিনটা বা চারটা ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করতে পারবো।’
বরিশালের প্রাণ ক্রিস গেইল পাঁচ ম্যাচের জন্য এসেছিলেন। চোট না পেলে শেষ ম্যাচের চেহারা অন্যরকমও হতে পারতো। গেইল বিহীন বরিশালের কি হবে? শাহরিয়ার নাফিস বলছেন, ‘গেইলের বিকল্প নেই। টিম ম্যানেজমেন্ট বলতে পারবে তার পরিবর্তে কাকে দলে নেবে। তবে আমি অধিনায়ক হিসেবে যদি বলি, ফিল মাসকার্ড রিজার্ভ বেঞ্চে আছে। ও খুবই ভালো খেলোয়াড়, ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলেছে। রমিজ রাজা জুনিয়রও খুব ভালো। পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তার রেকর্ড খুবই ভালো। আশা করছি তারা একাদশে আসবে এবং ভালো খেলবে।’
ক্রিকেটার গেইল চলে যাবেন রেখে যাচ্ছেন তার ব্যক্তিত্বের প্রভাব। শাহরিয়ার নাফিস ক্যারিবিয়ান সতীর্থের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই করলেন,‘ক্রিস গেইল যত বড় ‘প্লেয়ার’ তার চেয়ে অনেক ভালো মানুষ। তার সঙ্গে সাজঘরে থেকেছি। অনেক অভিজ্ঞাতা হয়েছে। প্রথম থেকে যেভাবে আমাদেরকে গ্রহণ করে নিয়েছে তা খুবই প্রশংসনীয়।’
চিটাগং কিংসের ক্রিকেটারদের চেয়েও বড় তারকা তাদের দুই কোচ। ডিন জোন্স এবং মাইকেল বেভান ছিলেন খ্যাতিমান ক্রিকেটার। তাদের ছোয়ায় কিংসও বিপিএলে খেলছে বুক ফুলিয়ে। জহুরুল অভিজ্ঞতাটা বর্ণনা করলেন্, ‘টুর্নামেন্টের আগে প্রস্তুতি নেওয়ার কিছুটা সময় পেলে উপকার হতো। বিদেশি কোচদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারতাম। খেলার মধ্যে তারা খুব একটা টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কাজ করছে না, মানসিক দিক নিয়ে কাজ করছে। তারা অনেক নামকরা মানুষ। অনেক বড় লেভেলে ক্রিকেট খেলেছেন। তাদের কাছ থেকে আসলে অনেক না জানা জিনিস আমরা শিখছি। আমি যখন মারতে যাচ্ছিলাম আমার বেইজ ঠিক মতো থাকছিলো না। আমি ওপরের দিকের শক্তি ব্যবহার করছিলাম। বেভান আমাকে বললেন, শক্তিটা আসে আমার পা থেকে। আমার বেইজটা ঠিক না থাকলে আমি পাওয়ারটা পাবো না। এটা নিয়ে তিনি ইনডোরে একটা দিন কাজ করেছেন। সেদিন প্র্যাকটিস ছিলো না শুধু আমার জন্য এসেছিলেন। অতিরিক্ত কাজ করলেন। ওখান থেকে আমি যদি নিতে পারি তাহলে উপকার হবে।’