চলছে বর্ষ বরণের ক্ষণ গণনা। বাঙালির বর্ষ বরণের অন্যতম অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। আর তাই তো ইলিশ নিয়ে এত কাড়াকাড়ি। কেউ কেউ চাইছেন বাজারের সেরা ইলিশটি কিনতে। তাই আগে থেকেই বাজারে ঘুরছেন শৌখিন ক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে এক হালি ইলিশ ৩২০০০ টাকায় কেনেন একজন ক্রেতা। তবে প্রায় অভিন্ন ওজনের ইলিশ যাত্রাবাড়ীতে ১০৫০০ ও সোয়ারীঘাটে ৮০০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কাওরান বাজারের দোকানি গৌতম দাশ জানান, এক হালি ৩২ হাজার টাকাসহ দিনে শুধু ইলিশ-ই বিক্রি হয়েছে ৬৫ হাজার টাকার। তিনি বলেন, চাঁদপুর থেকে তাজা ইলিশ এনে কোল্ড স্টোরে রাখা হয়। তবে ভাল ও বড় কোন পার্টি পেলে তারা সরাসরি পৌঁছে দেন। কাওরানবাজারে শুধু ইলিশের দোকান রয়েছে প্রায় ২৩টি। এর মধ্যে সুকুমার ও গৌতম দাশের দোকান দু’টি তাজা ইলিশের জন্য বিখ্যাত। গৌতম আরও বলেন, বৈশাখে মূলত তিন থেকে চারদিন বাজার চড়া থাকে। এরপর আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। সোয়ারীঘাটের দোকানি আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতি হালি ছোট ইলিশ ২০০০, মাঝারি ৩০০০ থেকে ৪০০০ এবং বড় ৮০০০ টাকা বিক্রি করছি। ইলিশ বিক্রি হয় খুব ভোরে। মূল বিক্রি ভোর ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন, দেড় ঘণ্টায় ২৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। একই পরিমাণ সময়ে বৈশাখের আগের দিন বিক্রি হবে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। যাত্রাবাড়ীর দোকানি রহমান জানান, দেড় কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি করেছি ১০৫০০ টাকা। এ সময় ক্রেতা জাকির হোসেন জানান, দাম আরও বাড়তে পারে- এ আশঙ্কায় আগেই কিনে রাখলাম। কারণ এই একটি সময় বাঙালির জীবনে ইলিশকে উৎসবের মতো গ্রহণ করা হয়। যদিও ইলিশ আমরা সারা বছর খাই তবুও পহেলা বৈশাখে খাওয়ার মজাই আলাদা। বাংলাদেশ ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন পরিষদ প্রেসিডেন্ট আবু বকর সিদ্দিক জানান, বছরে ৪০০০ টন ইলিশ উৎপাদন হয়। ২০০০ টন সারা বছর বিক্রি হয়। বাকি ২০০০ টন বিক্রি হয় বৈশাখে। তিনি বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ মাছের আড়ত যাত্রাবাড়ী। এখানে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৫০০০ ব্যবসায়ীর ৪৫০টি দোকান রয়েছে। ঢাকা মহানগরের মধ্যে প্রায় ১০টি পাইকারি মৎস্য আড়ত রয়েছে।