প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও অটিজম আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী সায়মা হোসেন পুতুল বলেছেন, অটিজম সমস্যা দূরীকরণে পারিবারিক পর্যায়ে থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষ মনোযোগই মূল হাতিয়ার।
তিনি অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
গ্লোবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ’র জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা হোসেন বিশ্ব অটিজম দিবসে ’অটিজম সচেতনতা ও করণী’য় শীর্ষক জাতিসংঘ আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসাবে এ আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের নর্থ লন ভবনের সম্মেলনে কক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়।
উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এই পর্বে প্যানেল আলোচক হিসাবে বক্তৃতা করেন কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি আলিয়া আহমেদ সাঈফ আল-তাহনি, ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক কুমার মুখার্জী, যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি এলিজাবেথ কসেন্স, নাইজেরিয়ার উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি উসমান সারকি, জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তর প্রধান সুসানা মালকোরা এবং অটিজম স্পিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সুজান রাইট।
সেমিনারে সায়মা হোসেন অটিজম আন্দোলনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নানান পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অটিজম মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের প্রতিবন্ধকতা, যা শিশুর জন্মের তিন বছরের মধ্যে প্রকাশ পেয়ে থাকে।
পুতুল বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ৮৮ জনের একজন এবং সারাবিশ্বে মোট ৭০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭ কোটি মানুষ অটিজমে আক্রান্ত। তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবছর যে সংখ্যায় এইডস, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের মতো রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয়, তার চেয়ে বেশি সংখ্যায় যোগ হচ্ছে অটিস্টিক শিশু। আমাদের দেশে গত দুই বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বলতে পারিÑ এই অটিজম আক্রান্তদের জন্য দরকার বহুমুখী সহায়তা।’
তিনি বাংলাদেশের প্রস্তাবে মানসিক প্রতিবন্ধী সমস্যায় আক্রান্তদের সহায়তায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন অটিস্টিক শিশুদের রক্ষায় সাত দফা কর্মকৌশল তুলে ধরে মানসিক ও শারীরিক উভয় ধরণের অটিস্টিক শিশুদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি অটিজম আন্দোলন বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এবং এ ব্যাপারে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী জোরদার করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে এ বিষয়ে রেজুলেশন প্রদানের আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে এক শুভেচ্ছা বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন অটিজম শিশুদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বের সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ’অটিজম আক্রান্তদের কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া বা তাদের উপেক্ষা করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।