‘বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি জোড় কদমে এগিয়ে চলছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আমাদের নজরে পড়ছে না। কিন্তু বিশ্বের নজরে ঠিকই পরেছে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বেসরকারি খাতের মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান এ কথা বলেন।
একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাপোর্ট টু ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিগত তিন বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫ গুন। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রত্যেটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তর অটোমেটেড হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাংসদ আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে অপর অতিথি ছিলেন ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত কুমার রায়।
অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এম এস আহসান, পরিচালক ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, এএসএম ফিরোজ আলম, এম আমানুল্লাহ, এ কে এম সাহিদ রেজাসহ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় আতিউর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত, সরকার, বেসরকারি সংস্থা, টেলিকম খাতসহ সংশ্লিষ্ট সব খাত একসঙ্গে কাজ করলে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইতোমধ্যে প্রবর্তন করা হয়েছে অন-লাইন ব্যাংকিং, ই-কমার্স, অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক, অন-লাইন সিআইবি এবং ব্যাংকিং খাতে আধুনিকতার অন্যতম মাধ্যম আজকের এই মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম।
গভর্নর বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং প্রচলিত শাখা ব্যাংকিং এর একটি বিকল্প ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে স্বল্প খরচে দক্ষতার সাথে আর্থিক সেবা ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তবে সীমিত এই আর্থিক সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরো প্রসারিত করার সুযোগ রয়েছে। যে কোন সময়- যে কোনস্থানে আর্থিক সেবার নিশ্চয়তা দেবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত ও কম খরচে টাকা লেনদেন বিশেষ করে, গ্রামীণ জনপদে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। সকলের জন্যে উন্নয়নের পূর্বশর্ত গুণমানের অংশীদারিত্বমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের বাস্তব ভিত্তি আরো প্রসারিত হবে।
তিনি আরো বলেন, জনসাধারণের দোরগোড়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে পারে। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ১৭টি ব্যাংককে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছে।
যারমধ্যে ৮টি ব্যাংক ইতোমধ্যেই এ কার্যক্রম শুরু করেছে। ব্যাংকিং সেবাবহির্ভূত জনগণকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ব্যাংকগুলোর অনুসরণের জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে একটি অপারেটিং নীতিমালা জারি করেছে।
বস্তুতপক্ষে, ব্যাংকিং-এ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এরসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবুজ ব্যাংকিং এর দিকে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংগুলোকে। এছাড়া এর ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিগত তিন বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫ গুণ। প্রত্যেক পরিবারেরকে ই-মেইল আইডি খুলতে বিশেষ উদ্যোগ নেবে সরকার।
২০১৩ সালের মধ্যে প্রত্যেটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তর অটোমেটেড হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সরকারের গৃহীত নানামুখী কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন তিনি।