বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্টজয়ী মুসা ইব্রাহীমের এভারেস্টজয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত ‘নেপাল পর্বত’ বইটিতে প্রথম বাংলাদেশি এভারেস্টজয়ী হিসেবে মুসা ইব্রাহীমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এক্ষেত্রে প্রথম বাংলাদেশি এভারেস্টজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এমএ মুহিত ও নিশাত মজুমদার। এদিকে মুসার এভারেস্টজয়ী ছবিটি গ্রাফিক্স করে বসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ।
শনিবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভি ‘নেপাল পর্বত’-এর তালিকায় মুসার নাম না থাকার বিষয় নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে পরিবর্তন-এর পক্ষ থেকে একাধিকবার মুসা ইব্রাহীমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে খুব শিগগিরই এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে পরিবর্তনকে জানান মুসার নিকটতম বন্ধু ও আত্মীয়রা।
তবে একাত্তরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুসা দাবি করেছেন, “ঈর্ষান্বিত হয়ে বাংলাদেশের কেউ হয়ত নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনকে প্রভাবিত করেছেন। এটা তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’।”
মুসার এক বছর পর এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন এমএ মুহিম। তিনি দাবি করেন, মুসা এভারেস্টজয়ের যে ছবি ও প্রমাণাদি দেখিয়েছিলেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এছাড়াও এভারেস্টজয়ী থেম্বু শেরপাও এ ছবিটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
একাত্তর টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকারে মুহিত বলেন, “মুসা এভারেস্ট জয় করা নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোতে ধারাবাহিকভাবে যে গল্পটি বলেছেন, তাতে বেস ক্যাম্প-১ থেকে চূড়া পর্যন্ত অনেক কিছুরই বর্ণনা নেই।”
মুসার ওয়েবসাইটে এভারেস্ট জয় করা নিয়ে তোলা ছবিটি ‘বিশ্লেষণ’ করে মুহিত দাবি করেছেন, “এটি বেস ক্যাম্প-১ এ তোলা। মুসার কাছে বেস ক্যাম্প-১ এর পর বেস ক্যাম্প-২, ৩ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কোনো ছবি নেই।”
একাত্তরের প্রতিবেদনে নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিম্বু জাংবু শেরপা বলেন, এভারেস্ট জয় করা নিয়ে মুসা যে ছবিটি দেখিয়েছে, সেটি চূড়ার নয়। কারণ চূড়ার ছবি এমন হয় না। এটি সাত হাজার ফুট নিচে তোলা ছবি।
এদিকে এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার বলেন, “নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন হয়ত মুসার ‘মিথ্যাচারের প্রতিবাদ’ জানাতেই নাম বাদ দিয়েছে।”
একাত্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, এভারেস্ট জয় নিয়ে মুসা যে স্মরণিকাটি প্রকাশ করেন তাতে তার (মুসা) সাথে আর যাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের কারো নামই ‘নেপাল পর্বত’-এ নেই।
সম্প্রতি চন্দ্রাবতী একাডেমী প্রকাশিত ‘সকাল বেলার পাখি’ সংকলন গ্রন্থে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইনাম আল হক এক নিবন্ধে এমএ মুহিতকে প্রথম বাংলাদেশি এভারেস্টজয়ী হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপর তা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান মুসা ইব্রাহীম। এ নিয়ে এখন মামলা চলছে।