জাতীয় পার্টির (জাপা) সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, “আমি অনেক রাজনীতি করেছি, আর রাজনীতি করবো না।”
বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও ৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ভবিষ্যতে আর নির্বাচনে যাবেন না এমন ঘোষণা দিয়ে রওশন বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমি আর নির্বাচনে যাবো না। আমি পরিস্থিতির কারণে নির্বাচনে আসতে বাধ্য হয়েছি। ভবিষ্যতে আর নির্বাচনে অংশ নিবো না। যতটুকু পলিটিক্স করেছি, আর করবো না।”
তিনি আরো বলেন, “আমার আর এরশাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। এরশাদ যখন জেলে ছিল তখন আমি পার্টি অফিস ঝাড়ু দিয়েছি। মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়িয়েছি। আন্দোলন অনশন করেছি। তখন অনেকে জাপা চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীকে বাদ দিয়ে আমাকে চেয়ারম্যান হতে বলেছিলো। আমি তাকেই বাদ দেইনি। চেয়ারম্যান হইনি। তাহলে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে বাদ দেয়ার প্রশ্ন আসে কেন। তখনই এরশাদকে ছাড়িনি। এখন কেন ছাড়বো?”
তিনি বলেন, “নানা বাধা বিপত্তি নিয়ে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনটা জরুরি ছিল। তাই বাধ্য হয়ে নির্বাচনে গিয়েছি। এ ব্যাপারে পরে আলাপ আলোচনা করবো।”
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ধৈর্য্য ও সহনশীলতা না থাকলে নেতৃত্ব দেওয়া যাবে না। সহনশীলতার অভাবে দেশ নেতৃত্ব শূন্য হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, “রওশন বলেছে, আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আসলেই তাই। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আমরা চিরকাল এক থাকবো।”
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “অনেকেই বলেছে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন নেই। কারন বর্তমান ছাত্র রাজনীতি ভয়ংকর। এই অবস্থা থেকে তোমরাই উদ্ধার করবে। তোমাদের মাঝে আমি আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।”
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এই প্রথম কোনো দলীয় সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিলেন রওশন এরশাদ। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পাশাপাশি বসেছিলেন। দলীয় রাজনীতি-কোন্দল নিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিলেন বিরোধী দলীয় এই নেতা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান। জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারাো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।