শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে এলাকার ঘর-বাড়ি, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার রাতে সীমান্তবর্তী নলকুড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যায় এ ঘূর্ণিঝড়। এসময় শীলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়ের প্রচণ্ড গতিবেগ বাড়িঘর ধ্বংস এবং অনেক গাছপালা উপড়ে ফেলেছে।
সেই সাথে প্রচণ্ড শীলাবৃষ্টি শত শত একর ইরি ও বোরো ধানের গাছ মাটির সাথে পিশিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম, সন্ধ্যাকুড়া, গোমড়া, ফাকরাবাদ, মানিককুঁড়া ও পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ও বাতকুঁচিসহ বিভিন্ন গ্রামের ইরি বোরো ফসল ও সবজি ফসলের সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
নলকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় কৃষি বিভাগের কেউ এখনো পরিদর্শণে যায়নি। ফলে ওইসব এলাকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “কৃষকদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে কালবৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টি। রাত ১১টায় বয়ে যাওয়া ২০ মিনিটের স্থায়ী কালবৈশাখী ঝড়ে এ ক্ষতি সাধিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত নলকুঁড়া ইউনিয়নের হলদিগ্রাম, গোমড়া, ফাকরাবাদ, মানিককুঁড়া ও সমশ্চুড়া এলাকার অবস্থা ভয়াবহ।”
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে এসব এলাকার কৃষকদের ঘর-বাড়ি ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি প্রত্যক্ষ করা গেছে।
হলদিগ্রামের হাতেম আলী জানান, ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি বেগুনের আবাদ করেছিলেন। এ আবাদটুকু তার পরিবারের সদস্যদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। শীলাবৃষ্টিতে ওই আবাদের ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওই গ্রামের আব্দুল খালেক। তার এক একর জমির ধান ও ৫০ শতাংশ জমির শীম ক্ষেত, আব্দুর রাজ্জাকের ৫০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ ক্ষেত, আব্দুল্লাহর ৫০ শতাংশ জমির ধান ক্ষেত, মফিজ আলীর দুই একর জমির ধান ক্ষেত, মোহাম্মদ ছামিউলের দুই একর বেগুন ক্ষেত, আবুল কালামের ৫০ শতাংশ জমির বরবটি, আবু তাহেরের ৫০ শতাংশ জমির গমক্ষেত, মোতালেব হোসেনের এক একর ধানের ক্ষেতসহ এলাকার শতশত কৃষকের বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, ওই চার গ্রামের কৃষকদের পুরো বোরো আবাদ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি।
কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কোরবান আলী বলেন, “তাদের কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”