বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হোটেল রূপসী বাংলা। হোটেলটির বড় ধরনের সংস্কার কাজের জন্য প্রায় দুই বছরের জন্য এটি বন্ধ থাকবে।
১৯ ফেব্রুয়ারি রূপসী বাংলা হোটেল পরিচালনার জন্য সরকারের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল হোটেল চেইন ইন্টারকন্টিনেন্টালের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। এ চুক্তি অনুযায়ী ইন্টারকন্টিনেন্টাল ৩০ বছরের জন্য রূপসী বাংলা লিজ নেবে। এজন্য হোটেলে বড় ধরনের সংস্কার কাজ করা হবে। এতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে। আর এ সময়কালে হোটেলটি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
তবে এ সময়ে রূপসী বাংলার বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিচ্যুৎ হবেন না। এদের প্রত্যেককে নিজ নিজ মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ইন্টারকন্টিনেন্টাল অন্য হোটেলের চাকরি দেওয়া হবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, আগামী রোববার সকালে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের সঙ্গে ইন্টারকন্টিনেন্টালের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে।
চূড়ান্ত চুক্তির জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এশিয়া অঞ্চলের প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা ঢাকা আসছেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএসএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়া পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, সচিব আতাহারুল ইসলাম উপস্থিত থাকবেন।
গত জুলাই মাসে ইন্টারকন্টিনেন্টালের লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এর প্রায় সাত মাস পর চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
বর্তমানে রূপসী বাংলা হোটেলটি (সাবেক শেরাটন) পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল)। হোটেলটিতে প্রায় ৬৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন।
বিএসএল এর নতুন বিধি অনুযায়ী, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল পরিচালনার দায়িত্ব নিলেও রূপসী বাংলা নামটি রাখার কথা ছিল। সে অনুযায়ী হোটেলটির নাম হওয়ার কথা ছিল ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল রূপসী বাংলা’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইন্টারনকন্টিন্টোল কর্তৃপক্ষ বিএসএল’র এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি হয়নি। তবে সরকারের কথা অনুযায়ী সংস্কারের সময় হোটেল বন্ধ থাকলেও রূপসী বাংলার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিজ নিজ মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ দিতে রাজি হয়েছে। সংস্কার কাজ চলাকালে ইন্টারকন্টিনেন্টালের বিভিন্ন হোটেলে রূপসী বাংলার বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেপুটেশনে পাঠাতে রাজি হয়েছে এ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল চেইনটি।
আগামী দু’বছরের মধ্যে এই সংস্কার কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে বিএসএল কর্তৃপক্ষ। সংস্কার কাজটি সরকার করলেও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কর্তৃপক্ষটি বিষয়টির সমন্বয় করবেন। শেরাটনের সঙ্গে এই ইস্যুতে বিরোধ দেখা দিয়েছিল সরকারের। যে কারণে তারা শেষ পর্যন্ত তাদের চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে রাজি হয়নি। সরকার চেয়েছিল সংস্কার কাজের সময় হোটেল বন্ধ এবং বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
বাংলাদেশে ২৭ বছর হোটেল পরিচালনা শেষে শেরাটন গত ১ মে বিএসএলকে হোটেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে যায়।
১৯৮৩ সাল থেকে বিএসএল এর মালিকানাধীন হোটেলটি পরিচালনা করে শেরাটন। এর আগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালই মিন্টো রোডের এই হোটেলটি পরিচালনা করে আসছিল।
১ মে থেকে হোটেল রূপসী বাংলা নামে হোটেলটি পরিচালনা করে আসছে বিএসএল।