জাপানি অলিম্পাস কোম্পানির সাবেক প্রধান কারাগারে

জাপানি অলিম্পাস কোম্পানির সাবেক প্রধান কারাগারে

জাপানের বিশ্বখ্যাত ক্যামেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অলিম্পাসের সাবেক চেয়ারম্যান সুয়োশি কিকুকাওয়াকে গ্রেফতার করেছে সেদেশের পুলিশ। ক্যামেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে তাকেসহ প্রতিষ্ঠানের অপর দুই সাবেক নির্বাহীকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় জাপানের সংবাদমাধ্যম।

প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর ধরে বিপুল পরিমাণ লোকসান তাদের শেয়ার হোল্ডারদের কাছে চেপে রেখে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে বলে অভিযোগ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি গত দুই দশকে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার লোকসান কারচুপির মাধ্যমে গোপন করে বলে জানায় সংবাদমাধ্যম।

২০১১’র অক্টোবরে প্রথম এই আর্থিক কেলেঙ্কারিটি উন্মোচিত হলে অলিম্পাসের তৎকালীন চেয়ারম্যান সুয়োশি কিকুকাওয়া পদত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে ঘটনার দায় স্বীকার করে অলিম্পাস কর্তৃপক্ষ কেলেঙ্কারিতে প্রতিষ্ঠানের ১৯ জন বর্তমান এবং সাবেক নির্বাহীকে দায়ী করে বিবৃতি দেয়।

গত অক্টোবরে কেলেঙ্কারির ঘটনাটি জনসম্মুক্ষে প্রথম প্রকাশিত হয়।

অলিম্পাসের সাবেক প্রধান নির্বাহী মাইকেল উডফোর্ড অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিকাশের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণেই তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

উডফোর্ড অভিযোগ করেন যুক্তরাজ্যের একটি মেডিক্যাল যন্ত্রাংশ কোম্পানি থেকে যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ অর্থনৈতিক পরামর্শকদের ৬৮ কোটি ডলার ফি পরিশোধের ব্যাপারে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন।

অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকভাবে অলিম্পাস কর্তৃপক্ষ সকল অভিযোগ প্রত্যাখান করে। তবে পরবর্তীতে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়, যে কোম্পানি গত ২০ বছর ধরে সাধারণ শেয়ার হোল্ডারদের কাছে লোকসানের সংবাদ লুকিয়ে আসছে।

এদিকে কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশের পর টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে অলিম্পাসের শেয়ারের মূল্য প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়।

টোকিও পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই অলিম্পাসের লেনদেনকে নজরদারির আওতায় এনেছে। কেলেঙ্কারির পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাম্প্রতিক লেনদেনের তথ্য দিতে দেরি করায় টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নেয়।

অলিম্পাসের বিরুদ্ধে গৃহীত পদক্ষেপ এবং ব্যবস্থাগ্রহনের ফলে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কেলেঙ্কারি জনসম্মুক্ষে প্রকাশের পর থেকেই অলিম্পাস কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে  কেলেঙ্কারির সঙ্গে ১৯ জন কর্মকর্তা জড়িত । তাদের মধ্যে কেউ কেউ বর্তমানেও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ আগামী মার্চ অথবা এপ্রিল মাস নাগাদ পদত্যাগ করবেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যম।

এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি একটি নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মনোনীত করার জন্য এর শেয়ার হোল্ডারদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক আহবান করেছে।

আন্তর্জাতিক