‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের গলা টিপতে টিপতে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছে যাকে এখন লাশ হিসেবে ঘোষণা করা বাকি আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নয়াপল্টনে অবস্থিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রবিবার চতুর্থ দফায় অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের সার্বিক চিত্র ও বিএনপির আশঙ্কার কথা তুলে ধরে অনিয়মের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও ভোটকেন্দ্র দখলের কথা আমরা বলছি না, আমরা বলবো প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে ভোট ডাকাতি করেছে এই অবৈধ সরকার।
তিনি বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি। অবৈধ সরকারের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের কথা বলেছি। চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে সেটি প্রমাণ হয়েছে।
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকারের মন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিফলন চতুর্থ দফা নির্বাচনে ঘটেছে।’
মানুষ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষ বলতে কী বুঝিয়েছেন জানি না। তবে নিজের মানুষেরা মটর সাইকেল র্যালী করে আকাশের দিকে গুলি ফুটিয়ে কেন্দ্র দখলের যে মহা আনন্দ উৎসব করেছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাদের উৎসব উল্লাসের ধ্বনি আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করেছে।
নিবার্চন কমিশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, নিবার্চন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক স্বাধীনভাবেই কাজ করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি করে মানুষ হত্যা, সরকারি সন্ত্রাসীরা বোমা ফাটিয়ে ও গুলি করে মহা-ধুমধামের সঙ্গে কেন্দ্র দখল, প্রিজাইডিং অফিসারের তত্ত্বাবধানে জালভোট প্রদান, ব্যাপক সহিংসতা, প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারা ও বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং ব্যালেট বাক্স ছিনতাই করে অগ্নি সংযোগ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, ‘কমিশনের কাছ থেকে সরকারের লোকেরা মুচলেকা নিয়ে নিয়েছে যাতে তারা ভিন্নমতও প্রকাশ করতে না পারে। তাণ্ডবের পক্ষে কমিশন মোলায়েম সুরে সাফাই গাইছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণ যেখানে ন্যূনতম ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছে সেখানেই জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। তা দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদ, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাৎ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিণ সুলতানা, মহানগরের যুগ্ম-আহ্বায়ক তাঁতি দলের সিনিয়র সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।