রাজধানীর রমনা নিউ ইস্কাটন সড়ক বন্ধ করে সিনেমার শ্যুটিং চলছে। আর এর নিরাপত্তায় আছে খোদ পুলিশ বাহিনী। সোমবার রাত ১০টার দিকে অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী পরিচালিত ‘বুনো হাঁস’ ছবির শ্যুটিং চলতে দেখা গেছে।
শ্যুটিং চলাকালে এই প্রতিবেদক সেখানে ছিলেন। তিনি সেখানে দেখতে পান, রমনা নিউ ইস্কাটন সড়কের দুই পাশে দুই শতাধিক মানুষের জটলা। যাতায়াত বন্ধ রাখতে ও উপস্থিত জনতাকে ঠেকিয়ে রাখকে দুই পাশে টাঙানো হয়েছে রশি। কিছুক্ষণ পর হই হুল্লোড়, চেচামেচি ও ধাক্কাধাক্কি চলছে। এই ভিড় ঠেলে সামনে গিয়েই দেখা গেল, রাস্তা বন্ধ করে চলছে শ্যুটিং।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকে এভাবে রাস্তা বন্ধ করে শ্যুটিং চলছে। ফলে এখানকার কয়েকটি দোকানের ব্যবসা তখন থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তা চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকে নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারছেন না। তবে এরই মাঝে মানুষ শ্যুটিং দেখছে। অনেকেই আবার রশি টপকিয়ে রাস্তা পারপারের চেষ্টাও করছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধাক্কা দিয়ে আবার অনেক সময় লাঠি পেটা করে সরিয়ে দিচ্ছে।
এই ছবির শ্যুটিংয়ের কারণে স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই পুলিশের। বরং তাঁরা নির্বিঘ্নে সুটিং করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি মো. ওলিউল্লাহ জানান, এই রাস্তা দিয়ে তাঁকে বাসায় যেতে হয়। বাসায় যাওয়ার জন্য সন্ধ্যায় এসে দেখেন পুরো রাস্তা বন্ধ। দোকানকদার মো. জমিস উদ্দিন জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই তাঁর দোকান বন্ধ। ধাক্কাধাক্কি করে অনেকে দোকানে ঢুকে পড়ছিলেন। প্রতিবেদকের কথা হয় এক শিশু শ্রমিক মো. রাসেলের সঙ্গে। সে জানায়, সে যে দোকানে কাজ করে ওই দোকানের কর্মচারিদের জন্য ভাত নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তা বন্ধ থাকায় সে দোকোনে যেতে পারছে না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য শ্যুটিংয়ে নিরাপত্তা দিচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে ওসি মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুমতি নিয়েই শ্যুটিং চলছে।’ মানুষের কষ্ট হচ্ছে, অনেকে এ রাস্তা দিয়ে বাসায় ফিরতে পারছেন না, এ অবস্থায় এ ধরণের শ্যুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হল কেন—এর জবাবে তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থেই এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’ বিভিন্ন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সমস্যার কথা জানালে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণের মধ্যে শ্যুটিং শেষ হবে।’
ওসির বক্তব্য ও রাস্তা আটকিয়ে শ্যুটিংয়ের ব্যাপারে জনাতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারি কমিশনার সাত্যক্কি কবিরাজ দোলন বলেন, ‘বিষয়টি আমি দেখছি।’
ছবির নির্বাহী পরিচালক অভিষেক বাগচি বলেন, ‘সমস্যার কথা জানালে আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাব।’