নায়ক মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি

নায়ক মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি

ঢালিউডের প্রয়াত নায়ক মান্নার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি রোববার। ২০০৮ সালের এই দিনে মান্না আকস্মিকভাবে চলচ্চিত্রশিল্পের সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। ঢালিউডে মান্নার অভাব আজও পূরণ হয় নি। নায়ক মান্নার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ‘মহানায়ক মান্না ফাউন্ডেশন’।

প্রয়াত নায়ক মান্নার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মান্নার কবর সংলগ্ন মসজিদ ও মান্নার নিজস্ব বাসভবনে মিলাদ মাহফিল, এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ। মান্নার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য সারাদেশের মান্না ফাউন্ডেশন ও মান্না স্মৃতি সংসদের নেতৃবৃন্দ এবং মান্নার অগণিত ভক্তদের বিশেষ দোয়াও প্রার্থনার জন্য মান্না ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেলী মান্না আহ্বান জানিয়েছেন।

নায়ক মান্নার পুরো নাম এসএম আসলাম তালুকদার। ১৯৮৪ সালে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে টাঙ্গাইল থেকে এসে চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন সুদর্শন এই তরুণ। নির্বাচিত হবার পরও কেউ বুঝতে পারেনি লিকলিকে এই তরুণটিই দীর্ঘসময় চলচ্চিত্রশিল্পে রাজত্ব করবে। কঠিন পরিশ্রম, চেষ্টা আর সাধনার মাধ্যমে মান্না নিজেকে কেবল চলচ্চিত্রের সেরা নায়কেই পরিণত করেননি, চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়ণে দায়-দায়িত্ব মাথায় নিয়ে চলচ্চিত্রশিল্পকে টেনে নিয়ে গেছেন। তাই উনিশ বছর শীর্ষ নায়কের স্থানটি ধরে রেখে চলচ্চিত্রশিল্পের সেবা করে গেছেন তিনি। ক্যামেরার সামনে মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করার পাশাপাশি চলচ্চিত্রের সুখে-দুঃখে সাহস করে এগিয়ে গেছেন। অশ্লীলতাবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি নানারকম হুমকির সম্মুখিন হয়েছেন। তারপরও তিনি থেমে থাকেননি। বেটার ফিল্ম ফোরাম গঠন করে অশ্ল¬ীল ছবির বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলে এক সময় সফল হয়েছেন।

নায়ক মান্না প্রায় ৩০০ ছবিতে অভিনয় করার পাশাপাশি সুস্থধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে অঙ্গীকার নিয়ে গঠন করেন কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্র। নির্মাণ করেন ‘লুটতরাজ’, ‘লালবাদশা’, ‘আব্বাজান’, ‘স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধু এক স্বামী’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’ ও ‘পিতামাতার আমানত’ নামে সুস্থধারার ব্যবসাসফল বাণিজ্যিক ছবি। সুঅভিনয়ের জন্য মান্না দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘বীরসৈনিক’ ছবির জন্য পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘কাশেম মালার প্রেম’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘দাঙ্গা’, ‘সিপাহী’, ‘লুটতরাজ’, ‘লালবাদশা’, ‘আম্মাজান’, ‘আব্বাজান’, ‘তেজী’, ‘পাঞ্জা’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’, ‘গুন্ডা নাম্বার ওয়ান’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘সাজঘর’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ‘, ‘দুই বধু এক স্বামী’, ‘পিতা মাতার আমানত’, ‘নায়ক’, ‘ভিলেন’, ‘মিনিস্টার’, ‘বর্তমান’, ‘কষ্ট’-সহ অসংখ্য হিট সুপারহিট ছবির নায়ক মান্না ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকের অবহেলার কারণে অকালে, অসময়ে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান পৃথিবী ছেড়ে।

বিনোদন