জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, যারা আমার আদেশ উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, তারা আমার প্রিয় পাত্র হতে পারে না।
পার্টির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দল ভাঙার ষড়যন্ত্রকারীদের স্থান রাজনীতিতে হবে না।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান ইমানুয়েলস সেন্টারে আয়োজিত জেলা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম সেটা পরে ব্যখ্যা করবো। তবে যারা আমার নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তারা আমার স্মরণে থাকবে। আর যারা আমার আদেশমত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তাদের কথাও আমি ভাবছি।
এসময় জাপার এমপিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তাদেরকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ৩০ জন এমপি এখানে উপস্থিত হননি। এখনও সময় আছে যদি তারা দল ভাঙার ষড়যন্ত্র থেকে না বের হয় এবং জাপার ছায়াতলে আবারও ফিরে না আসে। তাহলে তারা রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে। রাজনীতিতে তাদের স্থান হবে না। তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, এই ৩০ জন এমপি মানে জাতীয় পার্টি নয়। জাতীয় পার্টি কোটি কোটি মানুষের পার্টি। এর বাহিরে থাকার সুযোগ কারোর নেই। যারা বন্ধন ছিন্ন করতে চায় তাদের আবারো বলছি, তোমরা ফিরে এসো। তোমাদের সব ভুল আমি ক্ষমা করে দিবো।
এসময় উপস্থিত জেলা নেতাকর্মীরা এই ৩০ জন এমপির বহিষ্কারের দাবি তুললে এরশাদ বলেন, এবারের মত তাদের ক্ষমা করে দিতে চাই। তোমরা হতাশ হয়ো না। সামনে উপজেলা নির্বাচন। জাপাকে লাগবেই।
এরশাদ বলেন, বহুদিন রাজনীতির বাহিরে ছিলাম। বিশেষ কারণে তোমাদের সামনে আসতে পারিনি। নি:সন্দেহে বলা চলে জাপাতে সংকট চলছে। তবে তা মহা সংকট নয়। এ সংকট কেটে যাবে। হতাশার মেঘ কেটে যাবে। আমরা আবার রাস্তায় নামবো। ভোট চাইবো। আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হবই।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ’৯০-এর পর থেকে মামলা মাথায় নিয়ে বেঁচে আছি। অনেক ঝড় তুফান এসেছে। ভেঙে পড়িনি। নির্বাচন হয়ে গেলো। নির্বাচনের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয় সে নির্বাচনে জাপা থাকবে। আগামী নির্বাচনেও জাপাকে প্রয়োজন হবেই।
পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম হাবীব দুলাল, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, আবুল কাশেম, সাইদুর রহমান টেপা, সালমা ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর র্যব হেফাজতে সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় এরশাদকে। এর একমাস পর ১২ জানুয়ারি বাসায় ফেরত আসেন এরশাদ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনার জন্মদানকারী এরশাদ গত ২ মাস ধরে গণমাধ্যমের সামনে কোন কথা বলেননি। ১২ ডিসেম্বরের পর এটাই তার প্রথম বক্তব্য।