আলুচাষী, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের বাঁচাতে ৬ দফা দাবি –

আলুচাষী, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের বাঁচাতে ৬ দফা দাবি –

চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আলুচাষী, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের বাঁচানোর লক্ষ্যে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো- জরুরিভিত্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলু উপদেষ্টা বোর্ডের সভা আহ্বান। ভারত, চীন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলকভাবে টিকে থাকার লক্ষ্যে খাবার আলু, পটেটো ফ্লেক্স ও পটেটো স্টার্চ রপ্তানিতে ২০ শতাংশের স্থলে ৪০ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা, কৃষিভিত্তিক শিল্পে প্রদেয় বিএডিসি হিামাগার সমূহের ন্যায় সকল হিমাগারের বিদ্যুৎ বিলের ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান এবং বিদ্যুৎ বিলের উপর ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা। ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা। ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড ও টিআর প্রকল্পে আলু অন্তর্ভুক্ত করে সারাদেশে আলু বিতরণের কর্মসূচি গ্রহণ করা।

আলুর খাদ্যাভ্যাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, আনসার, ভিডিপি, জেলখানা, এতিমখানা ও আবাসিক হলে বাধ্যতামূলকভাবে আলুর তৈরি খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলু উপদেষ্টা বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বোর্ডের আর কোন সভা অনুষ্ঠিত হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ২০১৩ সালে আলুর  বাম্পার ফলনে বাজারে অস্বাভাবিক ধস সৃষ্টি হওয়ায় আলুচাষী, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে।

২০১৩ সালে সংরক্ষিত দেশের বিভিন্ন হিমাগারে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ বস্তা আলু অবিক্রিত রয়ে গেছে। ইতোমধ্যে দেশে গতবারের ন্যায় বিপুল পরিমাণ আলু উৎপন্ন হয়েছে। কিন্তু কৃষক পর্যায়ে কোন ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে কৃষক আবারও সর্বশান্ত হবে এবং আগামী মৌসুমে আলু চাষ না করলে দেশে প্রকট খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে।

দেশের আলুচাষী সমাজের উন্নতির লক্ষ্যে গত বৎসর আমরা আলুর খাদ্যাভ্যাস বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসোসিয়েশনের তরফ থেকে টিআর প্রকল্প ও ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড ও ওএমএস-এর মাধ্যমে আলু বিতরণের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম।

কিন্তু সরকার কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকেও ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ডে আলু বিতরণের পদক্ষেপ গ্রহণের নিমিত্তে নির্দেশনা জারি করা সত্ত্বেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি । সম্প্রতি দেশে আলুর বাম্পার ফলনের পরিপ্রেক্ষিতে দাম না পাওয়ায় বিক্ষুদ্ধ চাষীরা রাস্তায় আলু ফেলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সরকার কর্তৃক কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন দেশের আলুচাষী, আলু ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদেরকে নিয়ে রাস্তায় মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং আগামীতে সকল হিমাগার বন্ধ রাখাসহ অন্যান্য কর্মসূচি গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

এই অবস্থায় চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আপামর আলুচাষী, আলু ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদেরকে বাঁচানোর লক্ষ্যে জরুরিভিত্তিতে দাবিগুলো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ