সঙ্কটাপন্ন অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গ্রিসের পার্লামেন্ট একটি নতুন ব্যয় সংকোচন প্রস্তাব পাস করেছে। সঙ্কট কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষিত ২য় দফার ঋণ সহায়তা পাওয়া নিশ্চিত করতে ও দেশকে দেউলিয়াত্বের হাত থেকে রক্ষার জন্য গ্রিসের আইনপ্রণেতারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এদিকে এই বিল পাসের প্রতিবাদে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ ও সহিংসতা এথেন্সের বাইরেও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছেন, ব্যয় সংকোচন প্রস্তাবটি ১৯৯-৭৪ ভোটে পাস হয়েছে।
তবে খোদ সরকারের মধ্যে এই বিলের বিরোধিতা রয়েছে ব্যাপকভাবে। পার্লামেন্টে জোট সরকারের দুটি প্রধান শরীক দলের অনেক আইনপ্রণেতাই বিলটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সোশালিস্ট এবং রক্ষণশীল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির অনেক সদস্য দলীয় অবস্থানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোট দানে বিরত থাকে অথবা বিলটির বিরুদ্ধে ভোট দেয়।
বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ৪৩ জন আইন প্রণেতাকে বহিষ্কার করেছেন গ্রিসের ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন সরকারের টেকনোক্রাট প্রধানমন্ত্রী লুকাস পাপাদেমোস।
বিলটি পাসের প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন জোটের তৃতীয় শরীক ডানপন্থী এলএওএস পার্টি জোট থেকে বের হয়ে গেছে।
এদিকে বিল পাসের প্রতিবাদে এথেন্সে পার্লামেন্টের বাইরে হাজারো বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সিনেমা হল, ক্যাফে, দোকানপাট এবং ব্যাংক জ্বালিয়ে দেয়।
রাজধানীর বাইরে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা কর্ফূ এবং ক্রিটেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালুনিকিতেও ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। শুধু এথেন্সেই ৩৪টি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে চলমান সহিংসতা এবং বিক্ষোভের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার এই সব ধ্বংসযজ্ঞ এবং লুটপাট সহ্য করবে না।
বিলটি উত্থাপনের সময় তিনি আইন প্রণেতাদের সর্তক করে দিয়ে বলেন, প্রস্তাবের পক্ষে ভোট না দিলে তারা ঐতিহাসিক ভূল করবেন।
তবে গ্রিসের পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি পাস হলেও পার্লামেন্টের বাইরের বিক্ষোভে এটি পরিষ্কার যে এটির বাস্তবায়ন বর্তমান সরকারের জন্য দুঃসাধ্যই হবে।