চুপ থাকাই নিরাপদ

চুপ থাকাই নিরাপদ

কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে নীরব থাকাটাই ভালো। অযথা কারোর সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে গেলে লাভের চেয়ে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে রেলিগেশন পদ্ধতি অর্থাৎ দ্বি-স্তর চালু করতে চেয়েছিল ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। কিন্তু বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান সমর্থন না দেওয়াতে বাস্তবায়ন হয়নি। ভারতের ধারণা ছিল বাংলাদেশ এ প্রস্তাবে সাড়া দেবে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে সমর্থন দিতে অনেক অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু দেশের কথা ভেবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে তিন দেশের এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। পাপনের সঙ্গে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রশংসা করেছেন। সত্যি বলতে কি দ্বি-স্তর চালু হলে এই তিনদেশের কোনো ক্ষতি হতো না। কেননা প্রস্তাবে বলা হয়েছে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে ৯ ও ১০ নম্বর স্থানে থাকা দলকে আইসিসি সহযোগী দেশের সঙ্গে কন্টিনেন্টাল কাপ খেলতে হবে। সেই হিসেবে আগামী আট বছর বাংলাদেশ টেস্ট খেলার সুযোগ পেত না।

দ্বি-স্তর ছাড়াও আইসিসির সভায় বিভিন্ন ক্যাটারির প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড নিজেদের আর্থিক ফায়দা হাসিলের জন্য দু’দিনব্যাপী সভায় কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছিল। পাকিস্তানের বোর্ড সভাপতি জাকা আশরাফ বলছেন, দ্বি-স্তরের বিরোধিতা করলেও চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশের বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তিন দেশের ফান্ড বৃদ্ধির প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি এটাও বলেছেন, এর জন্য ভারত পাপনকে বেশ চাপ প্রয়োগ করে। পাপন আবার বলেছেন, জাকার বক্তব্য সত্য নয়। কেউ তাকে চাপ দেয়নি। আসলে এখানে কার কথা যে সত্যি এটা বের করা মুশকিল। তবে ভারতের বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজারই উল্লেখ করেছে দ্বি-স্তর ছাড়াও আরও প্রস্তাবে সমর্থন দিতে ভারত শুধু পাপনকে চাপ প্রয়োগ করেনি মায়ের মৃত্যুতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি শ্রীনিবাসন দুবাইতে উপস্থিত হতে না পারলেও স্কাইপে তিনি পাপনকে হুমকি দিয়ে বলেছেন প্রস্তাবে সমর্থন না দিলে ভারত ঢাকায় এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে আসবে না। সুতরাং জাকা আশরাফ না হয় এক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু আনন্দবাজার কি এসব কথা বানিয়ে বানিয়ে লিখেছেন। এখানে তাদের লাভ কি? তারাতো তাদের বোর্ড সভাপতিকে আরও ছোট করছেন। কিছু যে একটা ঘটেছে তা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় কথা নিজেদের অবস্থানের কথা চিন্তা করে পাপনের উচিত হবে এখন কাউকে মিথ্যুক না বলা। জাকা আশরাফ যে কথা বলুক না কেন, এটাতো সত্যি তারা যদি বিরোধিতা না করতেন তাহলেতো বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসেই হুমকির মধ্যে পড়ে যেত। তাছাড়া টেস্ট কন্টিনেন্টাল কাপ চালুর আশঙ্কা এখনো উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এপ্রিলে পুনরায় আইসিসির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এখানে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড যদি টেস্টে দ্বি-স্তরের প্রস্তাবটি পাস করাতে চায় আর পাকিস্তান যদি বিরোধিতা থেকে সরে আছে তখন বাংলাদেশের কি পরিণতি হবে পাপন কী সেটা ভেবে দেখেছেন। এবারে আইসিসির সভায় অনেক বিতর্ক হয়েছে তাই সত্য-মিথ্যা এখন অনেক কথা উঠতে পারে। এক্ষেত্রে যতটা চুপ থাকা যায় ততটা মঙ্গলজনক। পাকিস্তানের সঙ্গে এমনিতেই কূটনৈতিক সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবনতি ঘটেছে। এখন তাদের নিয়ে যেকোনো ব্যাপারে মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ পাপন ভালোমতোই জানেন বিশ্ব ক্রিকেটে তার ও আশরাফের অবস্থান কেমন।

 

খেলাধূলা