ক্রিকেট মাঠের খেলা। তাই দাপটটা মাঠে দেখালেই তো হয়! কিন্তু ভারত মাঠের বাইরে দাপট দেখাতে গিয়ে মাঠের ক্রিকেটে হ-য-ব-র-ল! ব্ল্যাক ক্যাপসদের কাছে শেষ পর্যন্ত কিনা ‘ব্ল্যাকওয়াশ’ হয়ে গেল। ওয়ানডে সিরিজে ভারতীয়রা হেরে গেল ৪-০-তে। যদিও পাঁচ ম্যাচের সিরিজের এক ম্যাচ টাই হয়েছে। কিন্তু সেটিতেও তো আধিপত্য ছিল নিউজিল্যান্ডেরই। ৪-০-তে পরাজয়কে ব্ল্যাকওয়াশ বলাই যায়!
কিছুদিন আগেই যে নিউজিল্যান্ড দল বাংলাদেশে এসে টাইগারদের কাছে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে, বাংলাওয়াশ হয়ে দেশে ফিরে যেতে হয়েছিল। সেই একই দল কিনা ধোনির ভারতকে পাত্তাই দিল না। আসলে দ্বি-স্তর ক্রিকেট নীতি নিয়ে ভারত এতটাই মশগুল ছিল মাঠের ক্রিকেটের দিকে তাকানোর সময়ই পায়নি। তাই তো দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ হারার পর নিউজিল্যান্ডে গিয়েও পড়তে হলো চরম লজ্জায়।
নিউজিল্যান্ডের সিরিজ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। তারপরও সিরিজের শেষ ম্যাচে যেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের মধ্যে কোনো আয়েশি ভাব ছিল না। ওয়েলিংটনে ধোনির ভারতকে তারা হারিয়েছে ৮৭ রানে। প্রথমে ব্যাট করে রস টেলরের সেঞ্চুরি ও কেন উইলিয়ামসনের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩০৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। ৩০৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২১৬ রানেই অলআউট হয়েছে ভারত। ৮২ রান করেছেন বিরাট কোহলি। অভিষিক্ত কিউই বোলার ম্যাট হ্যানরি ৩৮ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এ সিরিজে ভারতকে ধসিয়ে দিয়েছেন দুই কিউই ব্যাটস কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর। সিরিজের পাঁচ ম্যাচে পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। সিরিজে উইলিয়ামসন করেছেন ৩৬১ রান, যা দ্বিপক্ষীয় সিরিজে কোনো কিউই ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান। রস টেলরও কম যান না। উইলিয়ামসনের চেয়ে মাত্র ১৮ রান কম করলেও সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার। শেষ ম্যাচেও ১০২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছেন টেলর। আর উইলিয়ামসনের ইনিংসটি ছিল ৮৮ রানের। পুরো সিরিজে দুই তারকার দাপুটে ব্যাটিংয়ে ভর করে সহজেই ভারতকে বধ করেছে নিউজিল্যান্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকার পর নিউজিল্যান্ড সিরিজ হারার পর পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে, ভারতীয়রা শুধু দেশের মাটিতেই বাঘ। তাদের যত গর্জন বাড়ির আঙিনাতেই। দেশের বাইরে তারা হয়ে যায় নখদন্তহীন। পুরো সিরিজেই ভারতের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ। সুবিধা করতে পারেনি ভারতীয় বোলাররাও। তাই তো নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে তাদের প্রাপ্তির খাতাটা শূন্যই রয়ে গেল।