এভারেস্ট জয়ের পর চূড়া থেকে নামতে গিয়ে অতি আনন্দ, অসাবধানতা কিংবা দুর্ঘটনায় পর্বতারোহীর মৃত্যুতে তার পরিবার ও ভক্তদের মনের যে অবস্থা হয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনের অবস্থাও এখন তেমনই। টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে সারা দেশে সে কি আন্দোলন …অতঃপর বিজয়, অথচ ঘরের মাঠে সেই টেস্ট ক্রিকেটে একি হাল টাইগারদের? শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সাড়ে তিন দিনেই বিশাল পরাজয়, ইনিংস ও ২৪৮ রানে।
ভক্তদের আবেগের প্রতি কি অবিচার করা হলো না, ম্যাচ শেষে কাল এমন প্রশ্নও শুনতে হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। টাইগার দলপতির উত্তরও খুবই গতানুগতিক। খানিকটা অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে মুশফিক বললেন, ‘না না তা কেন হবে? এখানে অবিচার করার তেমন কিছু নেই। ক্রিকেটকে তো সবাই ভালোবাসে। আমরাও ভালোবেসেই এখানে এসেছি। এমন তো নয় যে, আমরা এখানে এসেছি বলে যা ইচ্ছা তাই করব। আমরা সব সময় ভালো খেলার চেষ্টা করি। আমরা দেশের জন্য খেলি, ভক্তদের জন্য খেলি।’
মুশফিক খুব ভালো করেই জানেন, বাংলাদেশ দল এখন আর সেই ছোট্ট শিশুটি নয়। টেস্ট ক্রিকেটে ১৩ বছর অতিক্রম করেছে। এখন যৌবনে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। গত দুই বছরের পারফরম্যান্সে তার ইঙ্গিতও রয়েছে পরিষ্কারভাবেই। এই শ্রীলঙ্কাকেই ওদের মাটিতে চেপে ধরেছিল টাইগাররা। তাই ঘরের মাঠে এমন করুণ অবস্থা যেন কোনো ক্রমেই মেনে নিতে পারছেন না মুশফিক। তারপরেও এমন পরাজয়কে দুর্ভাগ্যই বললেন তিনি। মুশফিক বলেন, ‘আমরা দুর্ভাগ্যবশত খুব বাজেভাবে হেরে গেছি। অবশ্য বল যে খুব খারাপ হয়েছে তা নয়। ব্যাটসম্যনরা তাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি। মিডল অর্ডার তো পুরা কলাপস্। যে কারণে এ অবস্থা । তাছাড়া ফিল্ডিংটা খুব বাজে হয়েছে। ব্যাটসম্যানরা যেভাবে আউট হয়েছে সেটা খুব চোখে লেগেছে। এ উইকেটে আউট হওয়া আসলে খুব কঠিন। আর ওরা যেভাবে বোলিং, ব্যাটিং করেছে অবশ্যই তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি শেখা যায় ততই ভালো আমাদের জন্য।’ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংসে হারায় দলের ওপর বাড়তি একটা চাপ পড়েছে। কিন্তু চাপ-টাপ নয় মুশফিক খেলোয়াড়দের আত্মোপলব্ধী করার কথা বললেন। ‘চাপ নেওয়ার তেমন কিছু নেই। কারো প্রমাণ করার তো কিছু নেই। ভালো দলের সঙ্গে ভালো খেলার একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তা পারি নাই। পরের টেস্টে আমাদের ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে। সম্ভবত এটা আমাদের জন্য একটা সতর্কবার্তা। এর চেয়ে শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেও আমাদের ব্যাটসম্যানরা খেলেছে। তাই এই পরাজয়ের পর আমাদের ব্যক্তিগতভাবেও বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা দরকার এবং সে অনুযায়ী কাজ করা দরকার।’