জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ বলেছেন, সরকার ঠাণ্ডা মাথায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাদের একে একে গুলি করে হত্যা করছে। গত ৪৩ দিনে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ৫৯ জন নেতা-কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার সাতক্ষীরা জেলায় দুজন ও ঝিনাইদহ জেলায় একজন জামায়াত শিবির নেতাকে যৌথবাহিনী গুলি করে হত্যা করার নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
মকবুল আহমাদ বলেন, দেশের কোনো নাগরিক, কোনো অপরাধ সংঘটিত করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু কোনো নাগরিককে ধরে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করার কোনো অধিকার রাষ্ট্রের বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নেই। নিরীহ জনগণকে হত্যা করার যে অপকৌশল সরকার গ্রহণ করেছে তাতে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক আর নিরাপদ নয়। সরকার নিজেই আইন লঙ্ঘন করে ও অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করে নাগরিকদেরকে আইন ভাঙ্গার ও বেআইনী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্যই মূলত উস্কানি দিচ্ছে। একটি সভ্য দেশের জন্য এ পরিস্থিতি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী আবুল কালাম ও শিবির নেতা মারুফ ওরফে ছোটনকে শনিবার যৌথবাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। রোববার ভোরে তাদেরকে উপজেলার নারিকেলি এলাকায় নিয়ে গুলি করে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
একই দিনে দুপুর ২টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শত শত মানুষের সামনে থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ উপজেলা জামায়াতের অর্থসম্পাদক এনামুল হককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। রোববারের স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে তার গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হয়। শনিবার গভীর রাতে তাকে উপজেলার নওদাপাড়া স্কুলের পাশে নিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহ জেলায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের তিন নেতাকে গুলি করে হত্যা করার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার মিথ্যা প্রচারণা চালায়। রাষ্ট্রের যৌথবাহিনী গুলি করে হত্যা করার পর তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার যে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে, তা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, সরকার নিজেই পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত করে তাদের অপকর্ম ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলকে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যার অপবাদ দিচ্ছে। এ অপবাদ দিয়ে তিনি এসব গণহত্যার দায় এড়াতে পারবেন না।
তিনি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এই মুহূর্তে বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। পাশাপাশি দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাকে সরকারের এ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।