জামায়াত নিয়ে কৌশল!

জামায়াত নিয়ে কৌশল!

ঢাকায় সোমবারের ১৮ দলের সমাবেশে প্রধান শরিক জামায়াতের অনুপস্থিতি এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বিএনপি নেতারা এ ব্যাপারে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। আর জামায়াত নেতারা আছেন চুপচাপ।
নির্বাচন পরবর্তী সময় জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির ওপর চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে জামায়াতের কারণে সহিংসতার দায় নিতে হচ্ছে বিএনপিকে। এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে যেমন বিএনপির ওপর চাপ আছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও চাপ অব্যাহত আছে। তারা কোনোভাবেই সহিংসতা গ্রহণ করছে না। তাই সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে জামায়াত না থাকার কারণ খুঁজছেন অনেকেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান জানান, জামায়াত কর্মসূচিতে থাকলে অনেক প্রশ্ন এবং ভীতি চলে আসে। সোমবার সমাবেশে জামায়াতের অনুপস্থিতির কারণে বিএনপি স্বস্তিতে আছে। আর জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোটগত সম্পর্ক সাময়িক এবং কৌশলগত।
তবে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক জানান, সোমবারের সমাবেশে জামায়াত প্রকাশ্যে অংশ নেয়নি। সমাবেশের মধ্যে যে তারা উপস্থিত ছিল না সেটা নিশ্চিত নয়। জামায়াত নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে এমনটি হয়েছে। বিএনপির অনেক নেতাও কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি।
এদিকে বিশ্লেষকরা একে দেখছেন বিএনপির চাপ কমানোর কৌশল হিসেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, বিএনপি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপ কমিয়ে আনতে হয়তো কৌশল নিয়েছে। জামায়াতের কাছ থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলা শুরু করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে বাদ দেয়া বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, এ দূরত্ব রেখে বিএনপি হয়তো কয়েক মাস দেখবে তার ফল কি হয়। আর তাতে যদি কোনো ফল না আসে, বিএনপিকে যদি আবার হরতাল-অবরোধে যেতে হয়, তাহলে জামায়াতকে তার লাগবেই। নিকট অতীতে তার প্রমাণ আছে। ভোটের হিসাব করলেও জামায়াতকে বিএনপির প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিউল আলমও মনে করেন, বিএনপি আপাতত জামায়াতকে কৌশলগত কারণেই একটু দূরে রাখাতে চায়। তবে শেষ পর্যন্ত এটা বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কে নতুন কোনো মোড় নেবে কি না- তা বুঝতে হলে আরো অপেক্ষা করতে হবে।

রাজনীতি শীর্ষ খবর