অসাবধান হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণেই অনলাইনে সাধারণত আমাদের নিরাপত্তা-ব্যবস্থায় নাক গলাতে পারে। আর বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে।
আইডেন্টিটি গার্ডের প্রেসিডেন্ট স্টিভ সোয়ার্জ বললেন, এমনটি ঘটলেই আমাদের মাথায় বাজ পড়ে। হায় হায় একি হলো! তবে এক্ষেত্রে আপনার কিছু উদাসীনতা তো রয়েছেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অতিমাত্রায় শেয়ারের কাজটি করলে সাধারণত ৫টি ভুল অজান্তে ঘটে যায়। তখনই আপানার তথ্য আর গোপন থাকবে না।
কাজেই এখন জেনে নিন, কোন ৫টি কারণে অনলাইনে আপনার গোপনীয় তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১. ওএস এবং ব্রাউজার আপডেট না করা :
ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকার অন্যতম সহজ উপায় হলো কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম এবং ব্রাউজার ব্যহারে হালনাগাদ থাকা।
বেস্ট আইডি থেফট কম্পানি ডট কম-এর রবার্ট সিসিলিয়ানো জানালেন, অপারেটিং সিস্টেম আপডেটেড না থাকলে নিরাপত্তা-ব্যবস্থার কিছু অংশ পুরনো হয়ে যায় যা হ্যাকারের কাছে সুবর্ণ সুযোগ। আবার আপডেটেড ব্রাউজারও নিরাপত্তা-ব্যবস্থায় নতুন কিছু না কিছু যোগ করে। তা ছাড়া সিসিলিয়ানো অ্যান্টি-ভাইরাস, অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার এবং ফায়ারওয়াল সফটওয়্যারও হালনাগাদ রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন।
২. বাছবিচার না করা :
অনলাইনের মাধ্যমে সেবা বা পণ্য বা যেকোনো কিছুর ভোক্তা যারা, তারা নামমাত্র সুবিধা আদায়ের জন্য অপরিচিত বা অনিরাপদ ওয়েবসাইটে কাজ করেন।
দ্য আইডেন্টিটি থেফট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নিল ও’ফেরেল বলেন, ব্রাউজার সিকিউরিটি টুলের ওপর আপনাকে ভরসা করতে হবে। জোড়াতালি দিয়ে প্রস্তুত ওয়েবসাইটে সহজেই ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হয়। এসব ওয়েবসাইটে কাজ করা মানেই তথ্য চোরদের চোখে আঙুল দিয়ে নিজেকে দেখিয়ে দেওয়া।
ম্যাকাফির একজন উপদেষ্টা জানালেন, এই সিকিউরিটি টুল সবার ব্যবহার করা ফরজ। এটা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে দেয়, তবুও মানুষ ব্যবহার করে না।
৩. সবসময় একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা :
একেক অ্যাকাউন্টের জন্য একেক আইডি-পাসওয়ার্ড মনে রাখা কঠিন কাজ। এ জন্য অনেকেই সব অ্যাকাউন্টের জন্য একটি আইডি-পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন।
এ ক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে বলে জানালেন সোয়ার্জ। বললেন, সমস্যার শুরু হয় যখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের জন্য আপনি যে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করছেন, সেটিই আবার অনলাইন শপিং সাইটেও ব্যবহার করছেন। একেক সাইটের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা ভিন্ন হয়। অন্য একটি সাইট থেকে আপনার আইডি-পাসওয়ার্ড চুরি যাওয়া মানে ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি চোরের কাছে খুলে যাওয়া। এটা পাওয়ামাত্রই তারা আপনার অন্যান্য অ্যাকাউন্টে এর ব্যবহার শুরু করবে।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির টুলস রয়েছে। আইপ্যাড, মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারের জন্য আপনার এই টুলসের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ওভারশেয়ারিং :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের যাবতীয় গোপনীয়তার এমন একটি ঝুলি যা অন্যের সাথে সহজেই শেয়ার করা হয়। আর এসব তথ্য শেয়ার করাতে পাসওয়ার্ড বের করে ফেলাটা একধাপ সহজ হয়ে যায়, বললেন সিসিলিয়ানো। যেমন- ভবিষ্যতে আপনার ভুলে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া পাসওয়ার্ড খুঁজে পেতে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। ধরা যাক, মায়ের নামের শেষ অংশ বা সবচেয়ে কাছের বন্ধুর প্রথম নাম ইত্যাদি। এগুলো ব্যক্তিগত বিষয় হলেও অনলাইনে চলে যাচ্ছে ব্যাপক হারে।
সিসিলিয়ানো সাবধান করে বললেন, আপনাদের এইসব তথ্য আপনাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে। কাজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারে সতর্ক হোন।
৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার :
এসব হট স্পটে আপনি সহজেই ই-মেইল দেখে নেওয়া বা একটু অনলাইনে ঘুরে আসা বা টাকা পাঠানোর কাজটি সেরে নিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, হ্যাকারদের জন্য পাবলিক ওয়াই-ফাই হট স্পটগুলো আপনাদের তথ্য চুরির লোভনীয় ক্ষেত্র।
তাই সোয়ার্জের মতে, এসব ওয়াই-ফাই স্পটে গুরুত্বপূর্ণ কাজ না করাই ভালো। নিজের নিরাপদ সংযোগ ব্যবহার করুন।