আগামী মে’র মধ্যে চতুর্থ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শেষ করেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসে উপজেলা নির্বাচন শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে মে’র মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এর পরেই জুনে ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। ইতোমধ্যে ডিসিসির সীমানা-সংক্রান্ত সব জটিলতা নিরসন করতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে কয়েক দফা তাগিদও দিয়েছে ইসি।
জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ১১৫টি, মার্চে ২২৩টি, এপ্রিলে ৩৫টি, মে মাসে ৮৫টি, জুন মাসে ১৮টি ও বাকি উপজেলাগুলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মেয়াদোতীর্ণ হবে। এ জন্য কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন শুরু করে চার দফায় মে মাসের মধ্যে সব উপজেলা নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর পরেই সরকার চাইলে জুনে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেবে ইসি। ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর ও দক্ষিণে দুই ভাগ করা হয়। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও আইনি জটিলতায় তা স্থগিত হয়ে যায়। তফসিল অনুযায়ী দুই সিটি করপোরেশনে ওই বছরের ২৪ মে ডিসিসি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সে সময় প্রায় দুই ডজন প্রার্থী মেয়র পদে এবং কয়েকশ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। এদিকে গত বছরের মে মাসে নির্বাচনের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে গেলে নতুন করে তফসিল ঘোষণার উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন। তবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে একটি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় সীমানা জটিলতায় নির্বাচন আবারও ঝুলে যায়। সীমানা নিয়ে জটিলতা নিরসনে এর পর স্থানীয় সরকারের পরামর্শ চায় তারা। কিন্তু তাতেও ইতিবাচক সাড়া পায়নি ইসি। ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপাতত ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের সীমানা বিন্যাস না করায় কমিশন ডিসিসি নির্বাচন করতে পারেনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে, অল্প সময়ে সীমানা ঠিক করে দেওয়া সম্ভব নয়। তারা না চাইলে কমিশন জোর করে এ নির্বাচন করতে পারে না। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান। আইন অনুযায়ী কমিশন কেবল তাদের নির্বাচনগুলো আয়োজন করে দেয়। উপজেলা শেষ না হলে ডিসিসি নির্বাচন করা ইসির পক্ষে সম্ভব হবে না। কেননা উপজেলার সময়সীমা দ্রুত শেষ হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগামী মে মাসের মধ্যে সব উপজেলায় নির্বাচন শেষ করেই ডিসিসির বিষয়ে ভাবা হবে। তবে সরকারকে ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করতে হবে। সর্বশেষ গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভরাডুবির কারণে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। আদৌ এ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়েও আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে সর্বত্র। এদিকে ডিসিসি দক্ষিণের নতুন ওয়ার্ড নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার পরেও একাধিকবার ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। কমিশন দায়সারাভাবেই এর আগে বলেছিল, গত ঈদুল ফিতরের পরে নির্বাচনের তফসিল দিয়ে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তাও করতে পারেনি ইসি। এমনকি এর পরে দশম সংসদ নির্বাচনও হয়ে গেল ৫ জানুয়ারি। এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু করেছে