যমের সঙ্গে ২৫ দিনের লড়াই। অবশেষে আজ প্রথম প্রহরে হার মানলেন সুচিত্রা সেন। গত ২৫ দিনে ক্ষণে ক্ষণে সুচিত্রার ডাক্তারি রিপোর্ট বদলেছে। সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে তাঁর আপডেট আসছে একের পর এক। ফেসবুকের হোমপেজ মুহূর্তেই ভরে যায় সুচিত্রা সেনে। তথ্যগুলো জানাচ্ছেন তরুণ প্রজন্মের সুচিত্রা সেন ভক্তরা। বাংলাদেশের তরুণরা আজ কয়েকভাগে বিভক্ত। অন্তর্জালে এখন ভারত ও পাকিস্তান বিদ্বেষী তরুণের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু সুচিত্রা বিদ্বেষী একজনকেও পাওয়া গেল না। তারুণ্যের বিদ্বেষ তাঁকে স্পর্শই করল না। হয়ত বাংলাদেশের পাবনায় জন্মেছেন বলেই সুচিত্রার এমন কদর। সুচিত্রা সেন পাবনায় জন্মেছেন, এই খবর যাদের অজানা তাঁরাও সুচিত্রার শোকে কাতর। কেন? এই তরুণদের সবাই সে অর্থে সুচিত্রা সেন ভক্ত নন। এরা ‘সুচিত্রা সেন’ নামক ব্র্যান্ডের প্রচারক। আর সেই ভাবমূর্তি ষাটের দশকে যেমন ছিল, এই সুপার হিরোর যুগেও তেমনিভাবে অক্ষত আছে। একজন তরুণ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সুচিত্রা সেন আমার দাদার প্রেমিকা। সুচিত্রা সেন আমার বাবার প্রেমিকা। সুচিত্রা সেন আমারও প্রেমিকা।’ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সুচিত্রা তাঁর প্রেমিকা ইমেজটাই রেখে গেছেন। প্রেমিকের প্রতি তাঁর সম্মোহনী হাসি এই সময়ের ক্যাটরিনা ভক্তদেরও টলিয়ে দেয়। আমরা চাইলেই সুচিত্রা সেনের ঝুলে পড়া বুড়ো গাল কল্পনায় আনতে পারি না। সুতরাং নিজের এমন প্রেমিকাকে ভুলে থাকার সাধ্য হবে না কোনো প্রেমিকের।
কেবল তরুণরাই? প্রবীণরা তো বাকরুদ্ধ! কারো কণ্ঠেই কথা নেই, নেই সুর। একজন প্রবীণ শিল্পরসিক আক্ষেপ করে বলছেন, ‘জীবনে আমার একটা ব্যর্থ প্রেম ছিল। সুচিত্রা যতদিন বেঁচে ছিল, আমার গোপন আশাও বেঁচে ছিল। আজ আমার সে প্রেমিকার মৃত্যু হলো, আশারও সমাধি হলো।’
প্রেম-ভালোবাসা-শ্রদ্ধা কখনো কাঁটাতারকে স্বীকার করে না, মানে না। সুচিত্রা সেনের মৃত্যু সে সত্যটা আমাদের আরো একবার জানিয়ে গেলেন।