৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নয় আওয়ামী লীগই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সব কূল হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, তাঁরা কোনো ‘কূলই’ হারাননি। ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে খালেদা জিয়া এ-কূল ও-কূল দুকূলই হারিয়েছেন’—প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের নেতাদের এমন মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন।
বুধবার বিকেল চারটায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হাতে কলমে প্রমাণ করেছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। এদেশের মানুষ তাদের রাষ্ট্রপরিচালনার পদ্ধতি হিসেবে গণতন্ত্রকে বাছাই করলেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘সব দেশের সঙ্গে আমাদের ভাল সর্ম্পক রয়েছে। আমরা চাই না বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করুক। আমরা জনগণকে নিয়ে উন্নয়নে বিশ্বাস করি।’
জামায়াত ইসলামের সঙ্গে বিএনপির জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামায়াত ইসলাম একটি রাজনৈতিক দল। ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি জোট করে নির্বাচনে গিয়েছিলো। আজকে যে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আন্দোলন চলছে তাও আওয়ামী লীগ ও জামায়াত ইসলামের তৈরি।’
বিএনপির বিগত দিনের আন্দোলন সফল কি না জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনে কোনো ভুল নেই। বিএনপি কোনো দিন সহিংসতা চায়নি বরং শান্তি স্থাপন করেছে।’
নির্বাচনের পরও সরকার সংলাপের কথা বলে বেড়াচ্ছে এ সময় সংলাপ কতটা ফলপ্রসূ হবে জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সংলাপের প্রস্তাব পাইনি। বিএনপি মনে করে আলোচনাই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ।’
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া প্রায় ২৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আর এ গনি, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, আব্দুল মান্নান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান পটল, বেগম সারওয়ারী রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৮ দলীয় জোটে নেতৃবৃন্দের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ড.কর্নেল (অব) অলি আহমদ, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পাার্টির চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ড. রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, খেলাফত মজলিশের সভাপতি মাওলানা ইসহাক, মুসলিম লীগের সভাপতি এইচ এম কামরুজ্জামান, জমিয়তে ওলামে ইসলামের সহ সভাপতি মাওলানা জহিরুল হক ভূইয়া, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, এনডিপির সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নীলু, ন্যাপের সভাপতি সভাপতি জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে জাল ভোট প্রদান ও কম সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।