বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি বহুমুখীকরণ এবং অদক্ষ কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে নজর দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনে দু’দিনব্যাপী বিদ্যুৎ বিভাগের ‘সেক্টর লিডার্স ওয়ার্কশপ’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে বলেই গত অর্থবছরে ৪০ শতাংশ রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্রই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর এই একক জ্বালানি নির্ভরশীলতা কমিয়ে এখানে ভারসাম্য আনয়ন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি কয়লা ভিত্তিক ও পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী বলেন, একই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে অদক্ষ কেন্দ্রগুলোর ওপরও নজর দিতে হবে। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে আন্ত:দেশীয় সহযোগিতারও (ভারত-ভুটান-নেপাল) উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিয়ানমার এবং চীনও যুক্ত হতে পারে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে এ খাতে বিনিয়োগের জন্য প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। বাংলাদেশ এখন যে অবস্থানে উন্নীত হয়েছে এতে করে অর্থের সঙ্কট হবে না। জনগণকে হয়তো কিছুটা কষ্ট করতে হবে। কোনো সুফল পেতে হলে সেজন্য কষ্ট করতেই হয়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের মার্চ থেকে বিদ্যুৎ খাতে অর্থায়নের বিষয়ে দাতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। আগামীতে এ বিষয়ে সুফল পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় বিদ্যুতের চাহিদা থেকে সরবরাহ যেন বেশি হয়। অর্থাৎ কোনো ঘাটতি বা সঙ্কট যেন না হয়। তিনি বলেন, ১৯৯০-৯১ সালের দিকে দেশে বিদ্যুতের কোনো সঙ্কট ছিল না। অর্থাৎ চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে একটা ভারসাম্য ছিল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত জ্বালানির মধ্যে ভারসাম্য আনয়ন এবং অদক্ষ কেন্দ্রগুলোর ওপর নজর দেওয়া হলে আগামী বছর বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যেও একটা ভারসাম্য চলে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হক।