একসঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থাকা অনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেছেন, সরকার ও বিরোধী দলে একসঙ্গে থাকা যায় না। বিরোধী দল থেকে মন্ত্রী হওয়ার বৈধতা নিয়ে ২০০৬ সালে একটি মামলা হয়েছিল। দেলোয়ার হোসেন বনাম রাষ্ট্রের এ মামলায় তৎকালীন বিচারপতি মোস্তফা কামাল একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন। ওই মামলায় তিনি বলেছিলেন, একই সঙ্গে সরকারে ও বিরোধী দলে থাকা অনৈতিক, গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার ও সংবিধান-বহির্ভূত। গতকাল রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমরা একটি নির্ভেজাল বিরোধী দল চাই। যারা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। মাথাটা সরকারি দলের, আর লেজটা বিরোধী দলের- এটা করা যাবে না। মাথা-লেজ বিরোধী দলের আর পেট সরকারি দলের; এটাও হবে না, হয়-ও না। সবাই যদি মন্ত্রিত্বের জন্য কাঙাল হয়ে পড়ি, তাহলে গণতন্ত্রের কাঙাল হবে কে? তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পাহারা দেয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি গণমাধ্যম। তারপর বিরোধী দল। আজকের বিরোধী দলকে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে রাজপথের বিরোধী দলের মোকাবিলা করতে হবে। বিরোধী দলবিহীন সংসদ, গণতান্ত্রিক এ প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারবে না। তাদের দায়িত্ব, ভাল কাজের সমর্থন দেয়া। আর খারাপ কাজের সমালোচনা করা। সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশীদের সাক্ষাৎকার দেন। আবার দেশে গৃহবন্দি দেখানোর জন্য ‘স্বেচ্ছাবন্দিত্বের’ ভান করেন। এবার খালেদা জিয়ার শুভবুদ্ধির উদয় হবে। স্বেচ্ছাবন্দিত্ব থেকে বেরিয়ে আলোচনার মাধ্যমে রাজনীতিতে আসবেন। তার হাসিনাবিহীন রাজনীতির এ আবদার কে রক্ষা করবে- এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি। সংসদের বিলুপ্তি নিয়ে তোফায়েল আহমেদ ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভিন্ন মতের বিষয়ে জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এটা তোফায়েল-আশরাফ আর সুরঞ্জিত বাবুর বিষয় নয়। এটা একটা কেতাবে লেখা আছে। এটা এবার নতুন হয়েছে, এজন্যই তো এটা নিয়ে আলোচনা হবে। সাংবিধানিক বিষয়ে সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ীই হবে। আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে, তারাও এ নীতি অনুসরণ করবে। নৌকা সমর্থক গোষ্ঠীর উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান, মীর হোসেন আখতার, আওয়ামী লীগের নেতা হেমায়েত উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।