শ্রীলঙ্কা সিরিজ মাঠে গড়ানো নিয়ে যে শঙ্কার মেঘ উড়াউড়ি করছিল বাংলার আকাশে, গতকাল সেটা মিলিয়ে গেছে দূর নীলিমায়। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিয়ুস, তিলকরত্নে দিলশানদের বাংলাদেশ সফর এখন আর অনিশ্চিত নয়। নির্ধারিত সময়েই দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে ঢাকায় পা রাখছে ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কা। গতকাল শ্রীলঙ্কার আসার বিষয়টি দুবাই থেকে ফোনে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আগামী ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় পা রাখবে শ্রীলঙ্কা।
গত দুই মাসের টানা অবরোধ এবং সহিংস আন্দোলনে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর ফলে শঙ্কার জন্ম হয়েছিল এ বছরের তিনটি আসর শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে। গত ৪ জানুয়ারি কলম্বোয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভায় আগের সিদ্ধান্তেই স্থির থাকেন সদস্যরা। ফলে এশিয়া কাপ ঢাকাতেই বসছে এবং পাঁচটি দেশ অংশ নিবে আসরে। এশিয়া কাপের ১২ নম্বর আসর বসবে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত। কলম্বো থেকে দেশে ফিরে বিসিবি সভাপতি জানিয়েছিলেন আইসিসির দুই দিনব্যাপী সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। দুবাইয়ে আইসিসির সভায় যোগ দেওয়ার আগে বিসিবি সভাপতি দেখা করেন শ্রীলঙ্কান হাই কমিশনারের সঙ্গে এবং তাকে আশ্বস্ত করেন নিরাপত্তার বিষয়। এরপর দুবাই যাওয়ার আগে জানান শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিশ্চিত করাই তার মূল লক্ষ্য। আগের শিডিউল অনুযায়ী মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দুটি ওয়ানডে, একটি টেস্ট, চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে একটি টেস্ট ও দুটি টি-২০ ম্যাচ এবং সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে একটি ওয়ানডে হওয়ার কথা। অবশ্য নিরাপত্তার বিবেচনায় সিলেট থেকে ওয়ানডে সরিয়ে আনা হতে পারে।
নিরাপত্তার কথা বলে পাকিস্তান এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে অফিশিয়ালি কোনো কিছুই জানায়নি। দুবাইয়ের আইসিসি সভায় যোগ দেওয়ার আগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি নাজাম শেঠী জানিয়েছিলেন, নিরপত্তার বিষয়টি তারা প্রাধান্য দিবেন। গতকাল দুবাইয়ে বিসিবির সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় পিসিবি সভাপতি এশিয়া কাপে খেলার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। অবশ্য বাড়তি নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের বাড়তি নিরাপত্তা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন, ‘এশিয়া কাপে পাকিস্তানও খেলবে। তবে তারা বাড়তি নিরাপত্তা চেয়েছে। আমরা তাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।’
পাকিস্তানের নিশ্চয়তার পর এশিয়া কাপ আয়োজনের শঙ্কা দূর হয়েছে পুরোপুরি। দূর হয়েছে শ্রীলঙ্কা সিরিজের আশঙ্কাও। আজই হয়তো টি-২০ বিশ্বকাপের বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। হয়তো অপরিবর্তিত থাকবে ভেন্যু। বাংলাদেশেই বসবে ১৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত আইসিসির সবচেয়ে বড় আসর টি-২০ বিশ্বকাপ।