লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের বাবুল বাহিনীর প্রধান আসাদুজ্জামান বাবুল নিহত হওয়ার পর কিছু দিন এলাকা শান্ত থাকলেও আবার মাথা চাড়া দিচ্ছে তার বাহিনীর সদস্যরা। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়, গত বছরের ১৫ মে দত্তপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন শামীম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জামিরতলী এলাকায় দিঘলী ইউনিয়নের বাবুল বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে শামীম বাহিনীর প্রধান নুর হোসেন শামীমসহ তিন জন নিহত হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শামীমের সাত সহযোগীকে আহত অবস্থায় আটক করে।
ওই দিন রাতে সদর হাসপাতালে দেলোয়ার হোসেন নামে শামীমের এক সহযোগী মারা যায়। পরে কারাগারে থাকা অবস্থায় সুমন নামে আরেক জন মারা যায়। শামীম মারা যাওয়ার পর আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে বাবুল বাহিনীর আসাদুজ্জামান বাবুলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী বাহিনী।
একের পর এক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ একাধিক অনৈতিক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তারা। তখন অভিযোগ উঠে লক্ষ্মীপুর সদর থানার বিগত সময়ের ওসি মো: আলতাফ হোসেনের সঙ্গে বাবুলের সু-সম্পর্ক গড়ে উঠার কথা।
পরে মান্দারী ইউনিয়ন যুবলীগের আয়োজনে দিঘলী ইউনিয়নের বাবুল বাহিনীর প্রধান আসাদুজ্জামান বাবুলসহ পূর্বাঞ্চলের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে কোন কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলতাফ হোসেনকে সদর থানা থেকে ক্লোজ করার জন্য সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াছমিন লিকা আলল্টিমেন্টাম দেন।
পরে বিগত লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো: মুনিরুজ্জামান সদর থানার ওসি মো. আলতাফ হোসেনকে সদর থানা থেকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে নেন।
এছাড়া গত স্বেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় দিঘলী ইউনিয়নের বাবুল বাহিনীসহ পূর্বাঞ্চলের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।
এতে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে গত ১৫ ডিসেম্বর র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবÑ১১ একটি দল জামিরতলী এলাকায় বাবুল বাহিনীর প্রধান আসাদুজ্জামান বাবুলকে গ্রেফতার করার অভিযান চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে বাবুল ও তার সহযোগী খোরশেদ আলম নিহত হয়।
পরে র্যাবের কার্যকরী প্রদক্ষেপের ফলে আবারও জামিরতলী, মান্দারী, দিঘলীসহ পাশ্ববর্তী পাঁচ গ্রামে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
কিন্তু বাবুল নিহত হওয়ার পর তার সহযোগীরা বেশ কিছু দিন পলাতক থাকার পর অভিযোগ উঠেছে। বাবুলের ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় এখন তার সহযোগীরা আবারও সংগঠিত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয়রা আরও বলেন, মান্দারী ইউনিয়নের বাবুল বাহিনীর সহযোগী বাহার উদ্দিন বাহার, আবুল বাশার ও পিচ্ছি বাবুল আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তাই এলাকাবাসী এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।