আদিবাসী হওয়ার কারণে শুধুমাত্র জীবন-জীবিকার তাগিদে ‘কুচিয়া’ মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে ঈশ্বরদীর ৪ শতাধিক আদিবাসী পরিবার। দিনের পর দিন কষ্টদায়ক এ কাজ করে বেঁচে আছেন তারা। আদিবাসীদের ধরা এই কুচিয়া মাছকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে গড়ে উঠেছে ‘কুচিয়া মাছের আড়ত’। সেখান থেকে সপ্তাহে দু’দিন ৪-৫শ’ কেজি কুচিয়া মাছ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। শুক্রবার ঈশ্বরদীর আদিবাসীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আদিবাসীরা জানান, বছরের নভেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরার মৌসুম। তবে এপ্রিল মাসে খাল-বিল-ডোবা-নালায় বেশি পরিমাণে কুচিয়া মাছ পাওয়া যায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরা হয়। একজন গড়ে ২/৩ কেজি করে ধরতে পারেন। আদিবাসী শম্ভু বিশ্বাস জানান, পুকুর অথবা বিলের পাশের ছোট ছোট গর্ত চিহ্নিত করে সুতার সাথে বঁড়শি বেঁধে কেঁচো অথবা ছোট ব্যাঙ লাগিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে একটু নাড়া দিলেই কুচিয়া মাছ বঁড়শিতে আটকে যায়। ডোবা-নালায় টাকি মাছ ধরার মতো করেই কুচিয়া মাছ ধরা হয়। স্থানীয়ভাবে প্রতি কেজি কুচিয়া মাছ বিক্রি হয় ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। কুচিয়া মাছ সাধারণত নোংরা-আবর্জনাসহ অন্যান্য মাছের জন্য ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ খেয়ে পানি পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। ফলে এই বিপন্ন প্রজাতির মাছ ব্যাপকভাবে ধরা হলে পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা মত্স্য অফিসার মনিরুল ইসলাম জানান, সাধারণত মাছ ধরতে সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বিদেশে চাহিদা থাকলেও ঈশ্বরদী এলাকায় এই মাছ কোথায়ও চাষ করা হয় না। ব্যাপকভাবে এই মাছ ধরা হলে বিপন্ন প্রজাতির এই মাছটি হয়তো একসময় হারিয়ে যাবে।