বছরের শেষ দিনেও ঢাকা রইল ঢাকাতেই। মঙ্গলবার সকালে কিছুটা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বিএনপি সমর্থকরা তাণ্ডব চালায়। মেহেরপুরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন এক জামাত নেতা। রাজশাহিতে তল্লাশি চালিয়ে বিস্ফোরক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিরোধী দলের ঢাকা অভিযানকে কেন্দ্র করে গত দু’দিন কড়া নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছিল শহরে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এ দিন বিকেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে আসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক হয় তাঁদের। অন্য দিকে, আওয়ামি লিগের জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ আশরাফুলের সঙ্গে দেখা করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসন। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কোনও পক্ষই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তায় পুলিশি টহল না চললেও নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখেনি সরকার। তবে নিরাপত্তা শিথিল করা হয় নয়া পল্টন ও খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে। তাঁর গুলশনের বাড়ির সামনে থেকে সোমবার রাতে অর্ধেক পুলিশ সরিয়ে নেওয়া হয়। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বিএনপি-র তরফ থেকে বুধবার অর্থাত্ ১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার বনধের হুমকি দেওয়া হয়। নির্বাচনের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। তার আগে বিরোধী দলের বনধের হুঁশিয়ারি নিয়ে নিরাপত্তা আরও আঁটোসাটো করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। বুধবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র রংপুর-সহ আরও দু’টি জায়গায় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অশান্তি এড়াতে আগে থেকেই ওই সব কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন প্রশাসনের মুখপাত্র মেরি হার্ফ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের সমস্ত বড় রাজনৈতিক দলকে গঠনমূলক আলোচনায় অংশ নিতে হবে। ভোটদানের দেশের মানুষকে মাধ্যমে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে।” তিনি আরও জানান, বাংলেদেশে শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট তত্পর আমেরিকা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির অসহযোগিতায় হতাশ মার্কিন প্রশাসন। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে এ দিন জানান হার্ফ।
২০১৪-র ২৪ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ভাবিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যসোসিয়েশনকে। ৪ জানুয়ারি কলম্বোয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)-এর বৈঠক হবে। ওই দিন এসিসি-র কাছে খেলার নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরা হবে হবে জানান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যকরী সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, “ ২০০৮-এ পাকিস্তানে অস্থিরতার মধ্যেও অনুষ্ঠিত হয়েছে এশিয়া কাপ। শ্রীলঙ্কাতেও এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে খেলা হয়েছে। আমি আশাবাদী বাংলাদেশও এশিয়া কাপ সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন করবে। নিরাপত্তার বিষয়টি পরিবর্তনশীল। পরিস্থিতি বুঝে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”