বিরোধী জোটের ডাকা ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহন। জানা গেছে, হরতাল-অবরোধে গণপরিবহন চলায় প্রশাসন সহযোগিতা করলেও এই কর্মসূচিতে সরকারের নির্দেশেই তা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর সাধারণ মানুষ।
গতকালের মতো আজ সোমবার সকালেও দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীরা গণপরিবহন না পেয়ে কেউ রিকশা-সিএনজি দিয়ে আবার কেউ পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। চলাচল করছে না অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিসগুলো। এমনকি সিটি সার্ভিস বাসের পাশাপাশি সমস্ত লোকাল বাসও চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরশু গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত দু একটি লোকাল বাস চলাচল করলে মিরপুর রোড, মানিক মিয়া এভিনিউ গণপরিবহনশূন্যপ্রায়। মিরপুর থেকে মতিঝিল, পোস্তগোলা, চিটাগাং রোডেও খুবই সীমিত পরিসরে বাস চলছে। গাজীপুর আজিমপুর রুটে চলাচলকারী ভিআইপি বাস মিনিটে ২-৩টা যায় সেখানে এক থেকে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাওয়া যাচ্ছে না এমনটাই অভিযোগ করেছেন মহাখালীর আমতলী বাসস্ট্যান্ড ও কাকলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমান যাত্রীরা। তবে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি যথারীতি চলাচল করছে।
রাজধানীর কোনো দিক থেকেই সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীগামী বাস চলাচল নেই বলে জানা গেছে।সকাল সোয়া ৯টায় ফার্মগেট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে অফিসগামী শত শত যাত্রী অপেক্ষা করলেও কোন রুটের বাস আসছে না। হঠাৎ করে দু-একটি বাস আসলে সেটাতে উঠা নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যাচ্ছে। তেজগাঁও, কুড়িল, উত্তরা এইসব রুটে তেমন কোন বাস চলাচল চোখে পড়ছে না। প্রগতি সরণি হয়ে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী সুপ্রভাত বাস বন্ধ করে কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
মধ্যবাড্ডা, নতুন বাজার এলাকা জুড়ে অফিসগামী শত শত যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গুলশান-১ ও গুলশান-২ এ যাত্রীরা পায়ে হেটে কিংবা অতিরিক্ত ভাড়া গুনে রিকশায় গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। কিছু কিছু লেগুনা ও ম্যাক্সি চলাচল করলেও সেগুলোতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দুইগুণ কিংবা তিন গুণ। তারপরও সেগুলোতে পা রাখার জায়গা নেই। বাদুড়ঝোলা হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। নাকাল হয়ে পড়েছে অফিসগামী যাত্রীরা। এ ছাড়া নগরীতে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। সব প্রবেশপথে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। মোড়ে মোড়ে চলছে তল্লাশি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষেরা।
এদিকে গতকাল রবিবার বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দেন, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচি আগামীকালও (আজ সোমবার) অব্যাহত থাকবে। নিজের বাসভবনের ফটকে গাড়িতে উঠে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেলে গাড়ি থেকে নেমে এসে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে তিনি কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরশু কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।’