পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে সামরিক অভিযানে গত কয়েক দিনে ৭০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। তারা বলেছে, হত্যা ছাড়াও সেনারা নির্বিচারে অনেক ঘরবাড়ি ও বাজার ধ্বংস করেছে। গত ১৮ ডিসেম্বর আদিবাসী-অধ্যুষিত ওই অঞ্চলে তালেবানবিরোধী অভিযান শুরু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আদিবাসী নেতা বলেন, ‘সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৭০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। ট্রাকচালকসহ কিছু হোটেল ও দোকানের মালিককে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অনেকেই মারা গেছে গোলার আঘাতে। মুহাম্মেদ তায়েব নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, হামলার প্রথম দিনে তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান মারা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, মোসাকি ও হাসুখেল নামের দুটি গ্রামে মরদেহ খোলা জায়গায় পড়ে আছে। হামলা থেকে বাঁচতে বেশির ভাগ মানুষ গ্রাম ছাড়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মীর আলী অঞ্চলের আসাদ শের নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরছি। কিন্তু সেনাদের কামান আমাদের পিছু ছাড়ছে না।’ কেবল আশ্রয় নয়, হামলার কারণে সেখানে তীব্র খাবার সংকট দেখা দিয়েছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সরকারি সেনাদের এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি তালেবানের কমান্ডার হাফিজ গুল জানান, সোমবারের (গতকাল) মধ্যে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা বন্ধ না হলে তাঁরা উপযুক্ত জবাব দেবেন।
এ ব্যাপারে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পাকিস্তানি পত্রিকা ডনকে সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, জঙ্গিদের বাইরে কারো ওপর হামলা না করতে সেনাদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর মীর আলী অঞ্চলে একটি তল্লাশি চৌকিতে তালেবানের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্য নিহত হন। সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, ওই হামলায় হতাহতদের উদ্ধার করতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এর পরই সেখানে কারফিউ জারি ও জঙ্গিবিরোধী সামরিক অভিযান শুরু হয়।