চিকিত্সাধীন’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে দেখতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সপরিবারে রিজভী সেখানে যান। এ সময় তিনি এরশাদের চিকিত্সার খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত তাঁর আরোগ্য কামনা করেন। এ সময় গওহর রিজভী ও তাঁর পরিবারকে ধন্যবাদ জানান সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে এরশাদকে তাঁর বারিধারার বাসা থেকে র্যাব ‘আটক’ করে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। দলীয় নেতাসহ মহাজোটের মন্ত্রী ও নেতারা সিএমএইচেই তাঁর সঙ্গে দেখা করছেন।
সারা দিনেও মুখ খোলেননি জাতীয় পার্টির কেউ
এদিকে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে জাতীয় পার্টির অবস্থান কী—সে সম্পর্কে আজও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। দুদিন বিরতির পর আজ দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যান। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। কোনো রকম সংবাদ সম্মেলন করার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি। এরশাদের ভাই ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদেরও প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। রওশন এরশাদের বাসায় আজ নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বাবুলকে একটি মোটরসাইকেলে করে রুহুল আমিন হাওলাদারের বাসায় যেতে দেখা যায়। এর বাইরে আজ আর কারও তত্পরতা তেমন চোখে পড়েনি।
মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা সাংবাদিকদের জানান, রওশন এরশাদের নেতৃত্বে একটি অংশ নির্বাচনে যাচ্ছে, এ কথা এখন সবাই জানে। প্রেসিডিয়ামের দু-একজন সদস্য ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ছাড়া প্রায় সবাই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাইছেন। জাতীয় পার্টি নিয়ে যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে ১৭ ডিসেম্বর থেকে তা কেটে যাবে। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির জরুরি বৈঠকে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ যোগ দিয়েছেন। কিছুদিন পর ‘নির্বাচনকালীন সরকারে’ বাকিদেরও দেখা যাবে।
এদিকে আজ এরশাদের মুক্তির দাবিতে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টি। বক্তারা এরশাদকে আটকের নিন্দা জানান। তাঁরা বলেন, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ নেই যেখানে রাতের আঁধারে কোনো দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বিনা ‘ওয়ারেন্টে’ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকার তাঁকে অসুস্থ বলে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীসহ দেশের ১৬ কোটি মানুষকে বোকা বানানোর অপচেষ্টা করছে।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করেন। পরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।