অভূতপূর্ব!
পার্থে আজ এক অভূতপূর্ব ঘটনাই ঘটতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে শততম টেস্ট খেলছেন দুই অধিনায়ক, ২০১৬তম ম্যাচে এসে এমন ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। অ্যালিস্টার কুক ও মাইকেল ক্লার্ক, শুধু ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কই নন, সময়ের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যানও বটে। শততম ম্যাচে দুজনেরই লক্ষ্য এক—জিততে হবে। কুককে জিততে হবে সিরিজ বাঁচাতে, আর ক্লার্ককে জিততে হবে অ্যাশেজ জয় নিশ্চিত করতে। ভবিষ্যতে একজন ম্যাচটাকে স্মরণ করবেন সুখস্মৃতি হিসেবে, আরেকজন চাইবেন ভুলে যেতে।
কুকের কাজটাই বেশি কঠিন। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে লজ্জাজনক পরাজয়ে দলের মনোবল নেমে গেছে শূন্যের কোঠায়। এক মিচেল জনসনের গতির কাছে নাকাল হয়ে অ্যাশেজ খোয়ানোর দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড। পার্থে হারলেই ভস্মাধারটা ফেরত দিতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। ব্যাট হাতে নিজেও ফর্মে নেই ইংলিশ অধিনায়ক। ধেয়ে আসছে সমালোচনার তির। তার ওপর সবাই মনে করিয়ে দিচ্ছে পার্থে ইংল্যান্ডের ইতিহাস (১২ ম্যাচে মাত্র একটি জয়)। সব মিলিয়ে চরম অস্বস্তিতে থাকা কুক নিজেই স্বীকার করেছেন শততম টেস্টটাই হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের ‘কঠিনতম’ ম্যাচ।
কাল প্রথম দুই ম্যাচের উদাহরণ টেনে ‘ক্যাপ্টেন’ কুক খুঁজলেন উত্তরণের উপায়, ‘প্রথম দুই ম্যাচের পর আমাদের মনোবল নড়ে গেছে। তবে একটি দল হিসেবে পেছনে দেখার বদলে সামনে তাকানোর চেষ্টা করছি। (সাফল্যের) ক্ষুধা ও ইচ্ছাটা দলের ভেতরে সব সময়ই ছিল। এই সপ্তাহে আরেকটা সুযোগ এসেছে সেটা দেখানোর।’ ‘এটা বিশেষ এক দিন। এটা আরও বিশেষ হবে যদি আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি’—আরও যোগ করেছেন কুক।
ওদিকে নিজের শততম টেস্টটা জিতেই অ্যাশেজ পকেটে পুরতে চান মাইকেল ক্লার্ক, ‘এটা দারুণ যে আমার দেশের হয়ে ৯৯টি টেস্ট খেলতে পেরেছি। এ নিয়ে আমি গর্বিতও। কিন্তু এটা অ্যাশেজ জয়ের এবং প্রথম দুই টেস্টের মতোই পারফর্ম করার মঞ্চও বটে।’
অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের অপেক্ষায় পুরো অস্ট্রেলিয়া। পার্থে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস পুরো অস্ট্রেলিয়াকেই জয়ের আশায় উসকে দিচ্ছে বহুগুণে। কিন্তু ক্লার্ক ইতিহাস নিয়ে পড়ে থাকতে চান না, ‘ইতিহাস বলছে এখানে আমাদের চমৎকার রেকর্ড। এ ছাড়া প্রথম দুই টেস্টের জয় থেকেও আত্মবিশ্বাসটা বেড়েছে। তবে শুক্রবার যখন তৃতীয় টেস্টটা শুরু হবে ইতিহাসের কোনোই মূল্য থাকবে না। আমাদের ইতিহাস আমাদেরই সৃষ্টি করতে হবে।’
তবে পার্থ টেস্টের আগে পেসার রায়ান হ্যারিসকে নিয়ে সংশয়ে আছেন ক্লার্ক। হাঁটুর চোটে ভোগা হ্যারিসের জন্য একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। হ্যারিসকে না পেলে খেলতে পারেন ডগ বলিঞ্জার অথবা নাথান কোল্টার-নাইলের একজন। ভাবা হয়েছিল জেমস ফকনারের নামও, কিন্তু কাল ডান হাতের বুড়ো আঙুল ভেঙে সম্ভাবনা শেষ হয়েছে এই অলরাউন্ডারের। ইংল্যান্ডও একাদশ ঘোষণা করবে মাঠে নামার আগে। এএফপি, বিবিসি ও ক্রিকইনফো।