মুশফিকের বিরুদ্ধে নাসিরের  জয়

মুশফিকের বিরুদ্ধে নাসিরের জয়

সহিংস রাজনীতিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর প্রভাব পড়েছে দেশের ক্রিকেটের ওপর। নিরাপত্তাহীনতায় সিরিজ অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূধর্্ব-১৯ ক্রিকেট দল। অবরোধ, সহিংস রাজনীতি দেশকে অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকলেও খেলা দেখার আগ্রহে বিন্দুমাত্র ঘাটতি পড়েনি ক্রিকেটপ্রেমীদের। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে টি-২০ চ্যালেঞ্জ সিরিজ। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হাজার দশেক দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন স্টেডিয়ামে। প্রাণভরে উপভোগ করেছেন জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারদের চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। টি-২০ বিশ্বকাপের আগাম প্রস্তুতির এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ ১২ রানে হেরে গেছে এক ঝাক তারকাসমৃদ্ধ জাতীয় দল। নাসির হোসেনের কাছে হেরে গেছেন মুশফিকুর রহিম। আজ একই সময়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।

স্কোয়াডে থাকার পরও খেলেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ততায় কাল স্টেডিয়ামের আশপাশে ভিড়েননি তিনি। হাঁটুর ইনজুরিতে খেলেননি পেসার রুবেল হোসেন। এছাড়া অ্যাডডোনাল ইনজুরির জন্য সিরিজ খেলছেন না বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল।

খেলা হবে কি হবে না, এ নিয়ে সন্দেহ ছিল ম্যাচ শুরুর আগেও। কিন্তু খেলা হয়েছে। নাসির হোসেনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ‘এ’ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭১ রান করে। যদিও ইনিংসে নেই কোনো হাফসেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস বাঁ হাতি ওপেনার ইমরুল কায়েশের। জাতীয় দলের সাবেক দুই ওপেনার ইমরুল ও জহুরুল ৪.১ ওভারে ৩৫ রান যোগ করে শক্ত ভিত দেন। জহুরুল ব্যক্তিগত ১০ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে নাঈম ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন। জাতীয় দলে পুনরায় ফিরতে মরিয়া ইমরুল প্রত্যয়ী ইনিংসটি খেলেন ৩৬ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায়। ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন মুমিনুল হক সৌরভ, ফরহাদ রেজা ও আলাউদ্দিন বাবু। মুমিনুল উইকেটের চারিদিকে স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে মাত্র ১৭ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় করেন ৩১ রান। তার ইনিংসের প্রথম বলটিই ছিল ছক্কা। জাতীয় দলে জায়গা পেতে মরিয়া ফরহাদও আক্রমণাত্মক ঢংয়ে ১৬ বলে ৫ চারে খেলেন ২৪ রানের ইনিংস। শেষ দিকে আলাউদ্দিন বাবু ২২৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ৭ বলে ১৬ রান করেন ২ ছক্কায়। জাতীয় দলের সফল বোলার ছিলেন বাঁ হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক রাজ। রাজ ৪ ওভারে ৩৬ রানের খরচে নেন ৪ উইকেট। শুধু উইকেট পাননি জিয়াউর রহমান। এছাড়া মাশরাফি ২টি, আল-আমিন, সোহাগ গাজী, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নেন একটি করে উইকেট।

১৭২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৮ ওভারে ৫৫ রান যোগ করেন এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান শুভ। বিজয় ৩৩ রান করেন ২৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায়। এরপর আরেক ওপেনার শামসুর রহমান শুভ মাত্র দুই রানের জন্য বঞ্চিত হন হাফসেঞ্চুরি থেকে। ব্যক্তিগত ৪৮ রান করে ইলিয়াস সানীর বলে ফিরেন সাজঘরে। অবশ্য দলের হারের মাঝেও উজ্জ্বল ছিলেন মুশফিক। ৩৩ রানের ইনিংসটি খেলেন মাত্র ২১ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায়। মুশফিক যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ মনে হয়েছে ম্যাচ জিতবে জাতীয় দল। কিন্তু ‘এ’ দলের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও নাসিরের চাতুর্যপূর্ণ বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করেছে মুশফিকবাহিনী। শেষ ওভারে ২৩ রান দরকার ছিল জাতীয় দলের। কিন্তু ফরহাদ রেজার করা শেষ ওভারে মাত্র ১০ রান নেন নাঈম ইসলাম ও জিয়াউর রহমান।

টি-২০ চ্যালেঞ্জ কাপ

বাংলাদেশ ‘এ’: ১৭১/৯, ২০ ওভার (ইমরুল কায়েশ ৪৫, জহুরুল ইসলাম অমি ১০, মুমিনুল হক সৌরভ ৩১, ফরহাদ রেজা ২৪, আলাউদ্দিন বাবু ১৬। মাশরাফি ৩৪/২, আল-আমিন ১/২৭, সোহাগ গাজী ১/২২, জিয়াউর রহমান ০/৩০, আব্দুর রাজ্জাক রাজ ৪/৩৬, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১/১৯)।

বাংলাদেশ: ১৫৯/৫, ২০ ওভার (এনামুল হক বিজয় ৩০, মুশফিকুর রহিম ৩৩, শামসুর রহমান শুভ ৪৮, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১০, নাঈম ইসলাম ২১*, জিয়াউর রহমান ১৬*। আরাফাত সানী ১/১৬, ইলিয়াস সানী ২/৩০, নাসির হোসেন ১/১৬)।

– See more at: http://www.bd-pratidin.com/2013/12/12/31703#sthash.xmruMjMp.dpuf

অন্যান্য খেলাধূলা বাংলাদেশ বিনোদন