জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আগামী ১৩ই ডিসেম্বরের মধ্যে দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, প্রয়োজন হলে তত্ত্বাবধায়কও মেনে নেবো। বরাবরই আমি তত্ত্বাবধায়কের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু দেশে যে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় এই সংঘাতময় পরিস্থিতি বন্ধ হয় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আমি তা মেনে নিতে প্রস্তুত। গতকাল দুপুরে বারিধারাস্থ প্রেসিডেন্ট পার্কে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন এরশাদ। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ মন্ত্রীদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, ৩ বার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি। তিনি গ্রহণ করেননি। বলেছেন, আমরা পাঠাইনি। সর্বশেষ ডাকযোগে পাঠিয়েছি, তা-ও গ্রহণ করেননি। এখন আমার দলের মহাসচিবকে পাঠিয়েছি। মহাসচিব সেখানে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না বলে আমাকে ফোনে জানিয়েছেন মহাসচিব। এদিকে সচিবালয়ে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক হলেও ওই বৈঠকে জাতীয় পার্টির কোন মন্ত্রী অংশ নেননি। যদি পদত্যাগপত্র সরকার গ্রহণ না করে করণীয় কি- এমন প্রশ্নে এরশাদ বলেন, গ্রহণ করুক বা না করুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি আমার কাজ শেষ করেছি। তিনি বলেন, ১৩ই ডিসেম্বরের মধ্যে দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরশাদ বলেন, শুনেছি আমার জন্য নাকি ১০০টি আসন ঠিক করে রাখা হয়েছে। ২০০ আসন দিলেও আমি নির্বাচনে যাবো না। ‘৫ই জানুয়ারির নির্বাচন অর্থহীন ও ক্ষণস্থায়ী হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষণস্থায়ী নির্বাচনে আমি যাবো না। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ও নির্বাচনের তফসিল পেছালেই আমি নির্বাচনে ফিরবো। এরশাদ বলেন, বিএনপির প্রার্থীরা গ্রামেগঞ্জে প্রচারণা চালিয়েছে। মনে করেছিলাম তারা নির্বাচনে আসবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসেননি। তাই এই নির্বাচনে আমি যেতে পারি না। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভয় বিএনপি। বিএনপি প্রার্থী দিলে তাদের নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে তারা একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করছে। এদিকে জাপার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির যে সব প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আবেদন করেছিলেন তাদের প্রার্থিতার আবেদন ১৩ই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৯ই ডিসেম্বর সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট পার্কের সামনে থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে নেতাকর্মীদের ভিড় রয়েছে আগের মতোই।