চলমান এ রাজনৈতিক সংকট কেন, উত্তরণের উপায় কী, এ জন্য কে বা কারা দায়ী—এসব জানতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজনের মতামত জানার চেষ্টা করছে প্রথম আলো। এর অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হলো জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাক্ষাৎকার। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় এরশাদের বারিধারার বাসভবনে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান
প্রথম আলো: আপনি কি বিশ্বাস করেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হচ্ছে?
এইচ এম এরশাদ: না। কিছুতেই না।
প্রথম আলো: তাহলে এটাই আমরা ধরে নেব যে আপনি বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচনে যাচ্ছেন না?
এরশাদ: না। তা নয়। সব দল না এলে নির্বাচনে যাব না।
প্রথম আলো: আপনার এই সব দলের মধ্যে বিএনপিও কি পড়ে?
এরশাদ: নিশ্চয়ই। বিএনপি একটি বড় দল। বিএনপি না এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
প্রথম আলো: ১৩ তারিখে জাপার সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন?
এরশাদ: লাঙল প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি আমার হাতেই।
প্রথম আলো: প্রতীক-সংক্রান্ত মামলার বাদী রওশন এরশাদ। তাই তাঁকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেই…
এরশাদ: লাঙল পেলাম কি পেলাম না, বড় কথা নয়। আমাকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করে তো লাভ হবে না।
প্রথম আলো: এখন কোনটা আসন্ন? জরুরি অবস্থা, না অন্য কিছু?
এরশাদ: অন্য কিছু না হওয়াই ভালো। কারণ, তা টেকসই সমাধান নয়। আর জরুরি অবস্থাও সমাধান নয়।
প্রথম আলো: আপনাকে হঠাৎ ভারতবিরোধী মনে হচ্ছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে আপনার দীর্ঘ সখ্য রয়েছে। ড্রয়িংরুমে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে আপনার আলোকচিত্র দেখলাম।
এরশাদ: ভারত আমাদের বন্ধু প্রতিবেশী। ইন্দিরা গান্ধী আমাকে ছেলের মতো জানতেন। সোনিয়ার সঙ্গে যে ছবিটির কথা বলছেন, সেটি কুয়েতে তোলা। তাঁর সঙ্গে বহুবার কথা হয়েছে। আমি বলতে চাইছি, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত যদি আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়, তাহলে সেটা ভারতের জাতীয় স্বার্থের অনুকূল হবে না। উপরন্তু শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিলে দেশের মানুষ অহেতুক ভারতবিরোধী হতে পারে।
প্রথম আলো: ৬ ডিসেম্বর আপনার আমলের অন্তিম দিন পালন করেছি। বলুন তো, রক্তের রং কী?
এরশাদ: রক্তের রং আমার জানা নেই। কোনো দিন রক্তের রং দেখিনি।
প্রথম আলো: আপনি বলেছিলেন, আপনার হাতে রক্তের দাগ নেই। আপনি কি কখনো কোনো নেতা-নেত্রীর হাতে রক্তের দাগ দেখেছেন?
এরশাদ: আমি ওই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। মানুষ মেরে ক্ষমতায় থাকা যায় না। জীবিকার সন্ধানে মানুষ বেরোচ্ছে, তারা মারা পড়ছে। গুলি করে মারা হচ্ছে।
প্রথম আলো: শহীদ নূর হোসেন ও ডা. মিলনের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ হয়েছে। কবিরা কবিতা লিখেছেন। এবার ৪৮ দিনের হরতালেই ২৯০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের জন্য শহীদ মিনার কারা করবেন? কারা কবিতা লিখবেন?
এরশাদ: দেশটা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে। আওয়ামী লীগ যখন মারে, তখন নীরবতা দেখি। কারণ, বেশির ভাগ কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী আওয়ামী লীগের দিকে। তাই তাঁরা কবিতা লেখেন না। দুঃখ পান না। বিএনপির সময়েও তাই। আমার একটা অসুবিধা ছিল। কারণ, আমি সামরিক বাহিনীর। সামরিক আইন জারি করে এসেছি। আমার সময় তাই তাঁরা বেশি করতেন। শহীদ নূর হোসেনকে পুলিশ মারেনি। ডা. মিলনকে কে মেরেছে, তা আজও জানি না। আমিও তাঁর হত্যার বিচার চেয়েছি, কিন্তু বিচার পাইনি।
প্রথম আলো: সেলিম-দেলোয়ার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হওয়ার পর আপনি সম্ভবত কিছু করেছিলেন।
এরশাদ: অনেকের বাধা সত্ত্বেও আমি তাঁদের স্বজনদের কাছে গিয়েছিলাম। বলেছি, আপনাদের সন্তান মারা গেছে। তাকে ফেরত দিতে পারব না। সে যা করতে পারত, আমি আপনাদের জন্য তা করতে চেষ্টা করব। যতটুকু সম্ভব হয়েছিল আমি সহায়তা দিয়েছিলাম। সিরাজগঞ্জে জিহাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। গরিব মানুষের ছেলে। তার বাড়িটা মেরামত করে দিয়েছিলাম। আমি কিন্তু তাদের মারিনি।
প্রথম আলো: আজ যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তার বিচার হচ্ছে না। এই দায়মুক্তির শেষ কোথায়?
এরশাদ: শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি মনে করেন না যে যারা মারা যাচ্ছে, তাতে তাঁর দায় আছে। এ অবস্থায় দেশটা এল কেন। হরতাল কেন হচ্ছে। বাস কেন জ্বলছে। আগেও এসব হয়েছে কিন্তু এতটা ব্যাপকতায় নয়। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। আমার মনে হয়, আমরা মানবিকতা হারিয়ে ফেলেছি। মরা মানুষ দেখে আজ আর মমতাবোধ জাগে না।
প্রথম আলো: আপনি কেন শেষ মুহূর্তে নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিলেন। সবটাই রাজনৈতিক কারসাজি? নাকি নীতিনৈতিকতাও আছে।
এরশাদ: আমি বারবার বলে আসছি, সব দল নির্বাচনে না এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। বিএনপি আসবে বলে অপেক্ষা করেছিলাম, তারা এল না। এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো কেন। সরকার বলতে পারত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানতে পারলাম না, তাহলে এমন একটা কিছু মানলাম, যাতে বিএনপি আসতে পারে।
প্রথম আলো: দর-কষাকষি করে মন্ত্রিত্ব নিয়েছেন। কী চেয়েছিলেন আর কী পেয়েছেন?
এরশাদ: দর-কষাকষি করিনি। ছয়জনের নাম চেয়েছে, দিয়েছি। সাতটাও চাইনি, ১২টাও চাইনি। কারণ, আমি জানি, এটা অস্থায়ী।
প্রথম আলো: কে কোন দপ্তর পাবেন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনাদের আলোচনা হয়েছিল?
এরশাদ: না। বিএনপি এলে ১২টি মন্ত্রিত্ব পেত। তাহলে সর্বদলীয় একটা সরকার নির্বাচন করতে পারত।
প্রথম আলো: প্রধানমন্ত্রীর হাতেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা। ৫০টি মন্ত্রিত্ব দিলেও এটা ভারসাম্যপূর্ণ হওয়ার নয়।
এরশাদ: শত ভাগ সঠিক।
প্রথম আলো: তাহলে আপনি বিএনপিকে ১২টি মন্ত্রিত্ব নিতে বলছেন কেন?
এরশাদ: আমি বলেছিলাম সে অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা থাকবেন না। অন্য কেউ আসবেন, সবার মতামতের ভিত্তিতে।
প্রথম আলো: আপনি কি কখনো এ কথাটি শেখ হাসিনাকে সরাসরি বলেছেন?
এরশাদ: বলেছি।
প্রথম আলো: তিনি কী বলেছেন?
এরশাদ: তিনি বলেছেন, এটা সম্ভব নয়। এই আলোচনা গণভবনে হয়েছে। আমি বলেছি, আপনি থাকলে বিএনপি আসবে না। তার চেয়ে সর্বদলীয় সরকার করে প্রধানমন্ত্রিত্ব পদ অন্য কাউকে দিন।
প্রথম আলো: সংসদের বাইরের কাউকে দিতে বলেছিলেন?
এরশাদ: ওই পদ এখন কেবল রাষ্ট্রপতিই নিতে পারেন।
প্রথম আলো: তার মানে ৩০০ জনের মধ্যে আপনি অন্য কাউকে দেখেন না।
এরশাদ: না। জাপা ২৯৯ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে। রাষ্ট্রপতির আসনে দিইনি। তিনি একজন ভালো মানুষ। বিএনপিও তাঁকে মেনে নিত।
প্রথম আলো: আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিরোধী। আবার সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন চাইছেন। এটা স্ববিরোধী কি না। এখন যে শর্তে নির্বাচনে যেতে চাইছেন, সেটা এর পরের নির্বাচনে কীভাবে কার্যকর হবে। একটা স্থায়ী ব্যবস্থা তো লাগবে।
এরশাদ: না। আমি নির্বাচনকালীন পদ্ধতি হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিরোধিতা করি না। আমার দুঃখ ও ক্ষোভ হচ্ছে, প্রতিটি নির্বাচনেই তারা জাপার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আমি তাই এই ব্যবস্থার প্রতি বীতশ্রদ্ধ।
প্রথম আলো: তাহলে ব্যবস্থা হিসেবে আপনি এর বিরোধী নন?
এরশাদ: না। এই সংকট আদালত থেকেও এসেছে। দুই মেয়াদে এই ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনের কথা বলে ১৬ মাস পরে আবার তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রথম আলো: কেন নিজেকে শৃঙ্খলিত রাজনীতিক ভাবছেন?
এরশাদ: আমার বিরুদ্ধে ৭৪টি মামলা করা হয়েছিল। মঞ্জুর হত্যা মামলা দেওয়া হলো ঘটনার ১১ বছর নয় মাস পর। সেই মামলার নিষ্পত্তি কেউ করল না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু-দুবার করে মেয়াদ পুরা করল। মহাজোটে পাঁচ বছর থাকলাম। এর সুরাহা হলো না। আদালত শুনানি শেষের পর হঠাৎ ২১-২২ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ঠিক হলো। শত্রুর সঙ্গেও এ রকম কেউ করে না। আমি তো মহাজোটের মিত্র ছিলাম।
প্রথম আলো: তার মানে মহাজোটে থেকেও আপনি একটা অদৃশ্য কারাগারে ছিলেন।
এরশাদ: আমি একটা কারাগারে ছিলাম। মন খুলে কথা বলতে পারিনি।
প্রথম আলো: আপনি কি এই দুঃখের কথা প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি বলেননি?
এরশাদ: অনেকবার বলেছি। তিনি বলেছেন, আইনের বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করতে চান না। অথচ শত শত মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমারটা হয়নি।
প্রথম আলো: আপনার কি মনে হয়, বিএনপিও এমনই আচরণ করত?
এরশাদ: তাই মনে হয়। দুই দলই একই আচরণ করেছে।
প্রথম আলো: খালেদা জিয়ার সঙ্গে কি এ নিয়ে আপনার কথা হয়েছে? আপনাকে যখন তারা পেতে চায় তখন এ নিয়ে কথা বলেননি?
এরশাদ: আমার প্রতি বিএনপির একটা স্বাভাবিক আক্রোশ থাকার কথা। কারণ, আমি তাদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়েছিলাম। ১৯৯৬ সালে আমার আসন ছিল ৩৩টি। বিএনপির ছিল ১১৬। বিএনপি লোক পাঠাল। আমার সমর্থন চাইল। আমি তখন বিএনপিকে সমর্থন দিলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারত না। আমি শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিলাম।
প্রথম আলো: ১৯৯০ এর পরে বেগম জিয়ার সঙ্গে আপনার কতবার সাক্ষাৎ হয়েছে?
এরশাদ: আমার ঠিক মনে নেই। তবে কয়েকবার হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। আমার বাসায় তিনি এসেছিলেন।
প্রথম আলো: আপনার ‘স্বৈরাচারী’ দশক আর দুই নেত্রীর দুই ‘নির্বাচিত’ দশকের মধ্যে তুলনা করুন।
এরশাদ: আমি সামরিক বাহিনী থেকে এসেছিলাম। তাই মানুষের ধারণা আমি স্বৈরাচার। কিন্তু অন্যায়ভাবে আমি কোনো মানুষকে শাস্তি দিইনি। আক্রোশের বশে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিইনি। আমি গণতন্ত্র চেয়েছি। তাই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম।
প্রথম আলো: আপনি তত্ত্ব দিয়েছিলেন দেশ পরিচালনায় সেনাবাহিনীর অংশীদারি থাকবে। সেই অবস্থান থেকে কি আপনি সরে দাঁড়িয়েছেন?
এরশাদ: সামরিক বাহিনী একটি শক্তি। তাদের যদি উন্নয়ন কাজে…
প্রথম আলো: সারা বিশ্বে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তাকারী হিসেবে সেনার ভূমিকা স্বীকৃত। কিন্তু ক্ষমতার অংশীদারি গণতন্ত্রে অচল।
এরশাদ: না, আমি ক্ষমতার কথা বলিনি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি হতে পারে না। এটা আমি কখনো বলিনি।
প্রথম আলো: প্রধান নির্বাহীর বাইরে কাউকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয় না কেন?
এরশাদ: দেশের প্রধান নির্বাহী প্রতিরক্ষাকে সব সময় হাতে রাখেন। কারণ, তিনি মনে করেন, এটা তাঁর বড় রক্ষাকবচ। কিন্তু সব সময়ই কি তা হয়? সব সময় তা হয় না। রক্ষাকবচ সত্ত্বেও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। তাই মনে হয়, এটা আরেকজনের হাতে রাখাই ভালো। আমি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ গঠন করেছিলাম।
প্রথম আলো: সেটা আজও চলছে। সেটা অগণতান্ত্রিক। আপনি কি মনে করেন না এই বিভাগ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ প্রকারান্তরে বেসামরিক কর্তৃত্বকে অগ্রাহ্য করছে এবং এর বিলুপ্ত হওয়া উচিত?
এরশাদ: না। আপনাকে মনে রাখতে হবে এএফডি সম্পূর্ণরূপে একটি সামরিক প্রতিষ্ঠান।
প্রথম আলো: সেখানেই আপত্তি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এর কোনো জায়গা নেই।
এরশাদ: কিন্তু এটাও তো ঠিক যে সবকিছু ঠিক হওয়ার পরে সব বিষয় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বেসামরিক কর্তৃপক্ষের (প্রধানমন্ত্রীর) কাছেই তো যাচ্ছে।
প্রথম আলো: আমাদের প্রতিরক্ষানীতি নেই। সাবেক সেনাপ্রধান হয়েও মহাজোট সরকারে থেকে এ নিয়ে কোনো কথা বললেন না। রাশিয়া থেকে আট হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র আমরা কেন কিনলাম?
এরশাদ: এই ক্রয়ের আদৌ দরকার ছিল না। যেসব অস্ত্র কেনা হয়েছে, তা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যবহূত হয় না।
প্রথম আলো: তারা এর আগের সরকারে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মিগ-২৯ কিনল। কী কাজে লাগল?
এরশাদ: সেটা একটা খারাপ ক্রয় ছিল। মিগের রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তা ছাড়া আমাদের এয়ারপোর্ট চীনা এয়ারক্রাফটের উপযোগী। দামও অনেক কম। অনেক অগ্রসর ওই রুশ যুদ্ধবিমান আমাদের দরকার ছিল না। আমরা তো কোনো দেশকে আক্রমণ করতে যাচ্ছি না। শুধু নিজেদের রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম আলো: আপনি কি কখনো এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।
এরশাদ: সেই সাহস কি আমার আছে?
প্রথম আলো: একটা নৈতিক সাহস মানুষের থাকে, নাকি আপনি শৃঙ্খলিত বলেই?
এরশাদ: না, তা নয়। একটা ক্রয় সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর আমি কী করে বলি এটা ঠিক হয়নি।
প্রথম আলো: ভারতের পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব জঙ্গিবাদ উত্থানের বিষয়ে আপনাকে ঠিক ওভাবে কথাটা বলেননি।
এরশাদ: তিনি বলেছেন, এখানে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে। সেটা ভারতের নিরাপত্তার সংকট বাড়াবে।
প্রথম আলো: আপনি স্বীকার করবেন যে ভারতের সেই উদ্বেগ সংগত?
এরশাদ: জঙ্গিবাদের উত্থান তো হচ্ছে। সেটা আমরা দেখছি। জামায়াতের উত্থান ঘটেছে।
প্রথম আলো: ভারতের চারটি রাজ্যের নির্বাচনের পর ইঙ্গিত মিলছে, বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারে। তাহলে দুই দেশ একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে?
এরশাদ: হ্যাঁ, আমরা যে কারণে বিজেপি সম্পর্কে বলতে পারি না, একইভাবে তারাও পারে না।
প্রথম আলো: যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও জাতিসংঘ বিএনপিকে নিয়ে এবং ভারত বিএনপিকে বাইরে রেখেও নির্বাচন চাইছে। এই ধারণা ঠিক কি না।
এরশাদ: ঠিক। তবে বিদেশিদের কেউ বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দিতে পারবে না। এটা দেবে জনগণ। বাইরের কোনো শক্তি এটা পারবে না। অস্থিতিশীলতা ইতিমধ্যে এসে গেছে। এখন এ থেকে মুক্তির একটাই উপায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উভয়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা।
প্রথম আলো: সেনানিবাসে জন্মসহ অনেক কিছুতেই বিএনপি ও জাপা একই ধারার দল। অথচ আপনি আওয়ামী লীগের মিত্র হন, বিএনপি শত্রুই থেকে যায়। মূল কারণ কি আদর্শগত?
এরশাদ: না। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। আদর্শিক কিছু নেই। আমাদের সমাজ কখনো সংঘাত ও হানাহানিপূর্ণ ছিল না। এখনো নেই।
প্রথম আলো: কিন্তু জামায়াতি সন্ত্রাসে বহু লোক প্রাণ হারিয়েছে। এটা কি বিচ্ছিন্ন নাকি সমাজ সহিংস হয়ে ওঠার লক্ষণ?
এরশাদ: বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া হবে না। জামায়াত কিন্তু সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ছিল না। তাদের নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছে। এসব না করলে সম্ভবত তারা নাশকতা করত না।
প্রথম আলো: ১৯৯০-এর পরে বিএনপি জাপার ওপর জুলুম করে আপনাকে স্তব্ধ করতে পারেনি। একই নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগও বিএনপিকেও স্তব্ধ করতে পারবে না।
এরশাদ: আপনার সঙ্গে এক শ ভাগ একমত। এটা সম্ভব নয়। বিএনপির অফিসে হামলা চালানো হচ্ছে। এটা কোন গণতন্ত্র?
প্রথম আলো: সাম্প্রতিক নাশকতার জন্য কারা দায়ী? উভয় দলই জড়িত থাকতে পারে?
এরশাদ: বিএনপি বলছে, এটা সরকার করছে। সরকার বলছে, বিএনপি-জামায়াত করছে। আমার প্রশ্ন হলো এই অবস্থার সৃষ্টি হলো কেন। অবশ্যই উভয় দলই নাশকতা করছে। বাইরের লোকেরা করছে না। মূল কথা হলো নির্বাচন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এটা হবে না। সবাই তো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। আপনি শ্বাসরোধ করে রেখেছেন। তাই এসব ঘটনা তো ঘটবেই। মাঝখানে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।
প্রথম আলো: জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার প্রথমবারের মতো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। বলেছেন, নির্বাচনী সহিংসতায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানির দায়ে হেগের আদালতে আমাদের রাজনীতিকদের বিচার হতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার নীরব। কেন?
এরশাদ: হয়তো তারা কোনো বড় শক্তির ভরসায় নীরব রয়েছে। ভাবছে, তারা পাশে থাকলে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে জবাবদিহি করতে হবে না।
প্রথম আলো: বিএনপিও নীরব।
এরশাদ: হয়তো তারা এর গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। তবে সরকারেরটা বলতে পারি, তারা হয়তো ভাবতে পারে অন্য কেউ তাদের রক্ষা করবে।
প্রথম আলো: ১৯৯০ সালে আপনি যে ব্যবস্থা রেখে গেলেন, তারপর সংসদীয় ব্যবস্থার নামে রাষ্ট্রপতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শব্দ লেখা হলো। এ নিয়ে আপনাকে কথা বলতে শুনি না। শৃঙ্খলিত বলেই কি?
এরশাদ: দুই দলই এতে কর্ণপাত করবে না।
প্রথম আলো: আপনার শাসনামলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংসের অভিযোগ ছিল। সেই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বিনির্মাণ প্রক্রিয়াটি কেমন দেখলেন?
এরশাদ: আমি বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করিনি। কারও পদোন্নতি নিয়ে কথা বলিনি। নিম্ন আদালতেও নয়, উচ্চ আদালতেও নয়। পিএসসিতে কখনো হস্তক্ষেপ করিনি।
প্রথম আলো: আপনার একটি কথা অন্তত সত্য নয়। প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেনকে আপনি অপসারণ করেছিলেন। তিনি এজলাসে বসেছিলেন। আপনি বয়স কমিয়ে তাঁকে তাৎক্ষণিক সরিয়েছিলেন। সেই কলঙ্কের দাগ আপনার আছে। কেন, বলুন?
এরশাদ: বলতে আমার আপত্তি নেই। তিনি সামরিক শাসনের বিরোধী ছিলেন। এটা স্বাভাবিক যে সামরিক শাসনের বিরোধিতা সবাই করবেন। কিন্তু উনি একটু বেশি বিরোধী ছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে করেছিলাম। তবে তখন কিন্তু সামরিক শাসন চলছিল। গণতন্ত্রে উত্তরণের পরে আমি কিন্তু এমন কিছু আর করিনি। বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী অষ্টম সংশোধনী বাতিল করেছিলেন। আমার কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। প্রথম দিকে কিছু ভুল-ত্রুটি করেছিলাম। আমি এখন প্রদেশ গঠন করার কথা বলছি। যদি প্রদেশ হয়, তাহলে সেখানে স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ যাবে। এখন ব্যক্তির হাতে সর্বময় ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতাই উত্তম শাসনের জন্য বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য এটাই বড় হুমকি। এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা থাকার কারণেই শেখ হাসিনাকে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যেতে ভয় পাচ্ছে। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়নি। ক্ষমতা জনগণের কাছে যায়নি।
প্রথম আলো: আপনি বলেন, আপনাকে শৃঙ্খলিত করা হয়েছে। অথচ সপ্তম সংশোধনীর মামলার রায়ে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের জন্য আপনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ চাইলে মামলা করতে পারত। কিন্তু সেটা তারা করেনি। এর অর্থ হচ্ছে শৃঙ্খল কী হবে তা-ও কিন্তু বৈষম্যমূলক। আমাদের বেসামরিক রাজনীতিকেরা অতটা বেরসিক নন যে আপনাকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের জন্য শাস্তি দেবে। এখানেও কিন্তু দুই দলের মতৈক্য দেখি। আপনাকে তারা শৃঙ্খলিত করে, আবার শৃঙ্খলিত করেও না।
এরশাদ: (হাসি) আমাকে প্রয়োজন আছে বলে হয়তো করে না।
প্রথম আলো: হয়তো যে রাজনীতি তারা করে, সেখানে আপনার উপস্থিতির একটা গ্রহণযোগ্যতা তাদের দিয়েই চলতে হয়। ’৭৩ সালে ভুট্টো সামরিক শাসন ঠেকাতে যে বিধান করেছিলেন, আপনারা পঞ্চদশ সংশোধনীতে ঠিক সেটা আমদানি করলেন। আপনি কি মনে করেন, দৈত্যটা বোতলে পুরতে পেরেছেন?
এরশাদ: (হাসি) ছিপি খুলে যাবে একদিন।
প্রথম আলো: লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও নিউইয়র্ক টাইমস পরপর সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেও দুই দল প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। কারণ কী?
এরশাদ: এখানে একটা কথা বলি। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। আমি তাঁকে বললাম, নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে এখন ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি (সুজাতা সিং) বলেছেন, তাহলে কী হতে পারে? আমি বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করে সরকারের পরিবর্তন ঘটানো। অন্যথায় এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়া খুব কঠিন হবে।
প্রথম আলো: ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব শুনে কী বলেছেন?
এরশাদ: তাঁরা চাইছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক। কিন্তু বাংলাদেশে এক সরকার দুবার আসে না। স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনে চলে আসে আওয়ামী লীগ সরকারের দিন শেষ, বিএনপি সরকারে আসবে।
প্রথম আলো: এটা কেন ঘটে? চরম নিপীড়নমূলক শাসন বলেই কি?
এরশাদ: এটাই বড় সত্য। মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যায়। তাই তারা ক্ষমতাসীন সরকারকে বিদায় দেয়। এটা রোধের একটাই উপায় আছে, যদি বেনোভোলেন্ট (সদাশয়) শাসন আসে।
প্রথম আলো: বিশ্বব্যাপী বেনোভোলেন্ট শব্দটির পরে আরেকটি শব্দ বসে। সেটি বলেননি।
এরশাদ: (হাসি) ডিকটেটর। আমি বলি বেনোভোলেন্ট প্রধানমন্ত্রী। আমি যে ক্ষমতা ভোগ করেছি, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার চেয়ে বেশি ক্ষমতা ভোগ করছেন।
প্রথম আলো: সাংবিধানিক স্বৈরশাসন বহাল আছে। শুধু…
এরশাদ: (হাসি) কেবল ‘সদাশয়’ শব্দটি নিখোঁজ। তাই তো? আপনি নিরঙ্কুশভাবে সত্য।
প্রথম আলো: তফসিল ১০ দিন পেছানোর শর্ত মানলে নির্বাচনে আসবেন?
এরশাদ: আওয়ামী লীগ এটা মানবে না। কারণ তারা উৎকণ্ঠিত, যদি বিএনপি চলে আসে?
প্রথম আলো: বিএনপি নির্বাচনে আসুক আওয়ামী লীগ চায় না, কথাটা বিশ্বাস করেন?
এরশাদ: বিশ্বাস করি।
প্রথম আলো: নির্বাচন নিয়ে খালেদা হাসিনার কাছে দুবার নিগৃহীত হয়েছেন। এখন খালেদা একবার ফিরতি দেবেন। তাই বিএনপিও আসতে চায় না। এটা বিশ্বাস করেন?
এরশাদ: তা-ও বিশ্বাস করি।
প্রথম আলো: তাহলে বাংলাদেশ গভীর খাদের কিনারে যাচ্ছে, এটা অবধারিত?
এরশাদ: অবধারিত।
প্রথম আলো: কোনো কারণে আপনি নির্বাচনে গেলেও বিএনপিবিহীন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না? স্থিতি ও শান্তি আসবে না?
এরশাদ: না। আমি গেলেও সেই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে না। সব দল না এলে শান্তি আসবে না। নির্বাচন হলেও বর্তমান সংঘাত চলতে থাকবে। আমাদের হাত পুড়িয়ে লাভ কী। আমাদের বাঁচার আর কোনো পথ নেই।
প্রথম আলো: আপনি নাকি বিদেশে যাচ্ছেন? রওশন এরশাদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হচ্ছেন?
এরশাদ: সরকার এটা চাইছে। তারাই ছড়াচ্ছে। গভীর রাতে টিভিতে প্রথম শুনলাম।
প্রথম আলো: তবে আপনার স্ত্রী ও আনিস মাহমুদ সম্ভবত দ্বিধায় আছেন।
এরশাদ: দেখি আজকের দিনটা তো আছে। তাঁরাও শিক্ষিত। লেখাপড়া করেছেন। কোনো লাভ নেই। মানুষ ধিক্কার দেবে।
প্রথম আলো: তদুপরি ছিয়াশির মতো কঠিন উক্তি আপনি করেননি। নির্বাচনে গেলে জাতীয় বেইমান হবেন বলেননি। নিজেকে বদলাতে হলে বলবেন রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই!
এরশাদ: (হাসি) বঙ্গবন্ধুর কন্যা তো। তিনি তখন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তাঁরও একটা হিসাব ছিল।
প্রথম আলো: এখন বিশিষ্ট নাগরিকদের ফর্মুলা মানলে ক্ষতি কী, তাঁকে রেখেই?
এরশাদ: না, সেটা হবে না। এটা কাজ করবে না। তাঁকে সরে যেতে হবে। তিনি সরবেন না।
প্রথম আলো: বিএনপি নেত্রী অভয় দিয়েছিলেন, তিনি প্রতিহিংসার পথে যাবেন না। আচ্ছা, জাতিসংঘ কি গ্যারান্টি দিতে পারে?
এরশাদ: এটা দিলে খুব ভালো হয়। দেখি তারানকোকে কথাটা বলতে পারি।
প্রথম আলো: আপনার হারিয়ে যাওয়া দশক থেকে দুই নেত্রীর দুই দশকে যে পরিবর্তন এল না, তা কি আমাদের সমষ্টিগত ব্যর্থতা, নাকি প্রধানত দুই নেত্রীর ব্যর্থতা?
এরশাদ: এটা নেতৃত্বের ব্যর্থতা।
প্রথম আলো: দুর্নীতির কথা কী বলবেন।
এরশাদ: আমার দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
প্রথম আলো: আমরা অন্তত হংকংয়ে বিসিসিআই ব্যাংকের টাকার (১০ মিলিয়ন ডলার) কথা জানি। সেই প্রমাণ কিন্তু আছে। পাকিস্তানি ব্যাংকার নাকভির জবানবন্দি…
এরশাদ: না। আমার হিসাবে পাওয়া যায়নি।
প্রথম আলো: আপনি আপনার জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে বিকল্প বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগের জন্য এটা বড়ই দরকারি। এটা আসলে আপনি উভয় দিকে ব্যবহার করতে পারেন।
এরশাদ: ১৫১ আসন পেয়েও আমরা সরকার গঠন করতে পারব না।
প্রথম আলো: চাইলে আপনি ছিয়াশির বিরোধী দল হতে পারেন। যেটা হয়ে আওয়ামী লীগ আপনার উপকার করেছিল।
এরশাদ: সেটা হওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। কিন্তু ভাগ্যচক্রে যদি হয়ে যাই ক্ষতি কী!
প্রথম আলো: শিশির ভট্টাচার্য্য কি আপনাকে আহত করেছেন? নাকি তাঁর কার্টুনে আপনার ভূমিকা প্রকৃতই প্রতিফলিত হয়েছে?
এরশাদ: (হাসি) তা হয়েছে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
এইচ এম এরশাদ: ধন্যবাদ।
সৌজন্যেঃ প্রথম আলো