‘সময় বাড়ছে না’

‘সময় বাড়ছে না’

ecতফসিল স্থগিতে বিএনপির দাবি আর আরো সময় চেয়ে জাতীয় পার্টির আবেদনের পরও নিজেদের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

৫ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সোমবার বিকালেই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হবে। সেই সময় অন্তত ১০ দিন বাড়ানোর আবেদন নিয়ে রোববার দুপুরে ইসিতে যায় জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধি দল।

অন্যদিকে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে তফসিল স্থগিত রেখে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে ইসিকে আহ্বান জানান।

এই দুই দলের আহ্বানের পর তফসিলে পরিবর্তন আসছে কি না- সাংবাদিকদের সেই প্রশ্ন ছিল কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কাছে।

সন্ধ্যায় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে তার উত্তর ছিল, ‘না। তফসিলের আগের তারিখই অপরিবর্তিত আছে। ২ তারিখের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে, সে সিদ্ধান্তই বলবৎ রয়েছে।”

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানে রাজনৈতিক সমঝোতা হলে তফসিলে পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিইসি।

বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে বিএনপির। সে ক্ষেত্রে একদিন পর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়ে গেলে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ তাদের কার্যত থাকবে না।

সে ক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী দলকে ছাড়াই নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না- জানতে চাইলে আবার বিএনপিকে আনার জন্য ছাড় দেয়ার ইঙ্গিতও আসে সিইসির কথায়।

“বিরোধী জোটকে নির্বাচনে আনার জন্যে আমরা অনেক দেরি করেছি। বিরোধী দল যদি আসে, সমঝোতা হলে অনেক কিছুর দ্বার উন্মোচন হবে। সমঝোতা হলে অন্য আঙ্গিকে দেখা হবে।”

দুই প্রধান দলের মধ্যে মধ্যস্ততায় ইসির অনাগ্রহের কারণ ব্যাখ্যা করে কাজী রকিব বলেন, “সমঝোতার জন্য মধ্যস্থতাকারী হওয়ার একটা সমস্যা রয়েছে।

“দুই দলের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে গেলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। কেউ বলবে ওই দলের পক্ষে, কেউ বলবে এই দলের পক্ষে। সেজন্য সরাসরি এতে জড়িত হইনি।”

“তবে আমরা এনকারেজ করছি। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার উপায় নেই। সমঝোতা হলে অনেক কিছু সম্ভব।”কাজী রকিব বলেন, প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছে গেছেন, মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করছেন, তাদের প্রস্তুতিও রয়েছে।

“আশা করি, যে তফসিল দিয়েছি, সে সময়ে তারা (মনোনয়নপত্র জমা) দিতে পারবেন।”

নির্বাচন সম্পন্ন করতে মাঠ প্রশাসনে চিঠি

আগামী ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতার জন্য সব মন্ত্রণালয় ও মাঠ প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

গত বৃহস্পতিবার মাঠ প্রশাসন সংস্থাপন অধিশাখা থেকে এ সংক্রান্ত দুটি চিঠি পাঠানোর পর রোববার তা সংশ্লিষ্টদের হাতে পৌঁছায়।

তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচন ফলাফলের ঘোষণার পর ১৫ দিন সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পযন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলি না করতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেন ভূইঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব অর্পিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী বা ব্যক্তি আইন অনুযায়ী ‘নির্বাচন কর্মকর্তা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং এ দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের নিকট দায়ী থাকবেন।”

নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনে অনীহা, অসহযোগিতা, শৈথিল্য, ভুল তথ্য প্রদান ইত্যাদির জন্য শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়েও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দিতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের অধীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের প্রতিও একই রকম নির্দেশনা জারির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়।

বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর