উনি নির্বাচন চান না বলেই সহিংস কর্মসূচি দিচ্ছেন

উনি নির্বাচন চান না বলেই সহিংস কর্মসূচি দিচ্ছেন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলনের নামে নাশকতাসহ যে যত চেষ্টাই করুক না কেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেউই ঠেকাতে পারবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে। অসাংবিধানিক কোনো শক্তিকে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। নাশকতাকারীদের প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিতে দেশের প্রত্যেকটি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার সব চেষ্টাই করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও আমি নিজে তাকে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। নমনীয় যতটুকু হওয়ার ততটুকু আমরা হয়েছি। কিন্তু উনি নির্বাচন চান না বলেই আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে একের পর এক সহিংস কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। বিরোধী দলীয় নেতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আপনারা কতগুলো মন্ত্রণালয় চান, বলুন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চাইলেও দিতে রাজি। আসুন, নির্বাচনে আসুন। তিনি বলেন, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। শুধু তাদের প্রতি অনুরোধ রইল, দয়া করে মানুষ পুড়িয়ে মারবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময়ে প্রায় ৬ হাজার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হয়েছে। কোন নির্বাচন নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ করতে পারেনি। সকল নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পেরেছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। তাদের মাগুরামার্কা নির্বাচন দেশবাসী এখনো ভুলে যায়নি।

দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ব্যর্থ লোকেরা আমাদের বুদ্ধি-পরামর্শ দেয়, আবার রাষ্ট্রপতির কাছেও যায়। তখন (২০০৮-০৭ সালে) কেন তারা ব্যর্থ হলো। তিনি বলেন, বিএনপি ১ কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করে তাদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করে নির্বাচন করতে চেয়েছে। তারপরেই তো ওয়ান ইলেভেন এলো। অনেকে তখন তাদের (জরুরি সরকারের) পক্ষে ছিলেন। তারা আবার এখন আমাদের সবক দিতে আসেন।

বিরোধী দলের কর্মসূচিতে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে মানুষ পোড়ানোর ঘটনায় বিরোধী দলীয় নেতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনার মানবতা বলে কিছু নেই। ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে গেছেন। উনি জনগণের শান্তি চান না, অশান্তি চান। জনগণের শান্তি উনার ভালো লাগে না। এ কারণে একের পর এক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, এই পোড়ানোর খেলা বন্ধ করেন। বাংলাদেশের মানুষ ক্ষেপলে, যারা পোড়ানোর হুকুম দিচ্ছেন, তাদের পোড়ানোর জ্বালা সহ্য করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মামলার রায়ের দিনেও বিএনপি হরতাল ডেকেছিল। আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে বলে তাদের মনে বড় ব্যথা।

যুবলীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ জনসভা শুরু হয় সকাল ১০টায়। অনুষ্ঠানে ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু (চলচ্চিত্র), রফিকুল ইসলাম-মরণোত্তর (ভাষা), মুশফিকুর রহিম (খেলাধুলা), সিদ্দিকুর রহমান (খেলাধুলা), মোহাম্মদ এ আরাফাত (গণমাধ্যম) এবং ঝর্ণা বেগমকে (সাহসিকতা) বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়।

যুবলীগ চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ভূমিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।

 

অন্যান্য বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর