এবার জাতীয় নির্বাচনে কতোদিন সেনাবাহিনী দায়িত্বে থাকবে- ১৩ ডিসেম্বরের পর তা জানা যাবে বলে ইংগিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
তিনি আশা করছেন, শিগগিরই দেশের পরিস্থিতির উন্নতি হবে, শান্তিপূর্ণভাবেই হবে দশম সংসদ নির্বাচন।
বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণত ভোটের দিনসহ ৫ দিন পুলিশ, বিজিবি, সেনাসহ আইন শৃঙ্খলবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকে। এবারও ‘যথাসময়ে’ সেনা মোতায়েন করা হবে।
“রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে আরেকবার বৈঠকে বসব আমরা। কবে, কোথায় ও কয়দিনের জন্য সেনা মোতায়েন করা হবে- তখনই সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান,সাধারণত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরই রিটার্নিং কর্মর্কাদের নিয়ে বৈঠক করেন সিইসি। তফসিল অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে এবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে ১৩ ডিসেম্বর।
তার আগে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে, বাছাই হবে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর।
সোমবার এই তফসিল ঘোষণার তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বসে নির্বাচন কমিশন।
প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং নির্বাচনে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। ভোটের পরিবেশ কীভাবে স্বাভাবিক রাখা যায় সে বিষয়ে সবার সহায়তা চেয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহসাই উন্নতি হবে বলে তারা জানিয়েছেন।”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলের মধ্যে বিরোধ এখনো না মিটলেও সবার অংশগ্রহণেই নির্বাচনে হবে আশা করছেন কাজী রকিব।
তিনি বলেন, “সমঝোতা হবে, এখনো আশাবাদী আমি। তা হলে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করাও সম্ভব হবে।”
নির্বাচনে সামনে রেখে জনগণের জানমাল রক্ষা, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, বাংলাদেশ পুলিশ মহা পরিদর্শক, সশস্ত্রবাহিনীর বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, কোস্টগার্ড, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডিজিএফআই ও র্যাব মহাপরিচালক এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তারাই প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করেন। প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়েই আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সিইসি।
ইসির আইন শৃঙ্খলা বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রের ভিত্তিতে ভোটের আগে অন্তত ৫ দিনের জন্য মোতায়েন করা হয় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর [পুলিশ, বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, কোস্টগার্ড, র্যাব, সশস্ত্রবাহিনী] সদস্যদের।
অতীতে নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদেরও স্বল্প পরিসরে মাঠে নামানো হয়। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও তাদের সহায়তা করেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালের নবম সংসদ, ১৯৯৬ ষষ্ঠ সংসদ ও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে ৫ থেকে সেনাবাহিনী ৭ দিন মাঠে ছিল।
রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ভোটের প্রচারণার সময় থেকে দুই সপ্তাহের বেশি সেনা মোতায়েন ছিল।