পুঁজিবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে ৯শ’ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঘোষণা করেছে সরকার। ইতোমধ্যে তার প্রথম কিস্তির তিনশো কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। কিন্তু পুনঃঅর্থায়ন ঋণ সুবিধা গ্রহণে মিলছে না বিনিয়োগকারীদের সাড়া।
এ অবস্থার উত্তরণে পথ খুজঁছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার ঋণ আবেদন সময়সীমা আগামী ৩০ নভেম্বর। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র (আইসিবি) কাছে পুনঃঅর্থায়নের জন্য ব্রোকারদের অল্প কিছু আবেদন জমা পড়েছে।
আইসিবি সূত্রে জানা গেছে, আনুমানিক ৪০ কোটি টাকার মতো ঋণের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। আইসিবি শর্ত অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের মাঝে ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ অথবা নতুন ঋণ বিতরণের জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউসকে ঋণ হিসেবে এ অর্থ দেয়া হবে। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা এ সুবিধা পাবেন। তহবিলটির মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, পুনঃঅর্থায়নের নীতিমালা অনুযায়ী, এ তহবিলের অর্থ পেতে ৯ শতাংশ সুদসহ বেশ কিছু শর্ত দেয়া হয় বিনিয়োগকারীদের। এই ‘শর্ত’ কঠিন মনে করে ‘পুনঃঅর্থায়ন তহবিল’ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্তরা। বিনিয়োগকারীরা এ তহবিল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের নিয়ে বুধবার বৈঠক করে পুনঃঅর্থায়ন কমিটি। বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) এক বৈঠকে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার ঋণ আবেদন সময়সীমা বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা বলছেন,”ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কেন, কী কারণে আবেদন করছেনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে বিনিয়োগকারীদের আবেদন করাতে সময় বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।”
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন,”ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের দেওয়া পুনঃঅর্থায়নে বিষয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের প্রথম কিস্তির ৩০০ টাকা কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বণ্টন করা যায় তা দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণের শর্ত শিথিল করার সম্ভাবনাও রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ সাজিদ হোসেন বলেন,”বিনিয়োগকারীদের পুনঃঅর্থায়নের কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা বাড়ানো হবে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের অর্থ বরাদ্দের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ঋণ গ্রহণের শর্ত সহজতর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ বিষয়ে ব্রোকারদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব উঠে এসেছে। এ সকল প্রস্তাবের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
গত ২০ আগস্ট পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের অর্থ ছাড়ের নীতিমালা অনুমোদন দেয় অর্থমন্ত্রণালয়। গত ২৬ আগস্ট এই তহবিলের প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) এই টাকা স্থানান্তর করা হয়।