সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি এলাকায় মাইকে ডেকে লোক জড়ো করে আসামি ধরতে আসা পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির ওপর হামলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।সোমবার রাত ১টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ওই এলাকায় সংঘর্ষ, হামলা, লুটপাট চলে।
ওসি বলেন, জামায়াত প্রভাবিত ওই এলাকায় প্রায় দেড়শ আসামি আস্তান গেড়ে আছে, যাদের বিরুদ্ধে হামলা-নাশকতার বহু মামলা রয়েছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন থানায়।
গত কয়েক মাসে বিভিন্নভঅবে চেষ্টা করেও তাদের ধরতে না পেরে মঙ্গলবার রাতে খুলনা পুলিশের ডিআইজি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাব ও বিজিবির সহায়তায় এই অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা আগরদাঁড়ি এলাকায় পৌঁছালে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা মাইকিং করে কয়েক হাজার লোক জড়ো করে এবং যৌথ বাহিনীর ওপর হাতবোমা ও ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা যৌথ বাহিনীর সদস্যদেরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। তারা রাস্তার ওপর গাছ ফেলে অবরোধও সৃষ্টি করে।
“যৌথবাহিনীর সদস্যরা এ সময় আত্মরক্ষার জন্য টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ভোরের দিকে তাদের উদ্ধার করে সরিয়ে আনে।”
যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবির কর্মীরা সদর উপজেলার এলাকার আবাদের হাট বাজারে চড়াও হয় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী কার্তিক সাধু, নূর ইসলাম, শাহ আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং তাপস আচার্য ও গোপাল হালদারসহ অন্তত পাঁচজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালিয়ে আগুন দেয়।সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল খালেক মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, “যৌথ বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য ৩৩টি গাড়ি নিয়ে এলাকায় আসে এবং নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায়। এ সময় এলাকাবাসী মাইকিং করলে লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের গুলিতে শামছুর রহমান নামে আমাদের এক কর্মী মারা গেছেন।”
নিহত শামছু সদর উপজেলার শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে। তার লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খালেক মণ্ডল জানান।
এ ঘটনায় আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে এই জামায়াত নেতা দাবি করেন।
সদর থানার ওসি তদন্ত নাসির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ এক জামায়ত কর্মী নিহত হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। তবে তার লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।”
এ ঘটনায় যৌথ বাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হননি বলে জানান তিনি।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফসহ নয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাত ১২টার দিকে আব্দুর রউফকে তার গ্রামের বাড়ি আলিপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই সময়ে জেলা বিএনপির স্থগিত কমিটির সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলীর কামালনগরের বাড়িতেও অভিযান চালায় পুলিশ।
তবে বাড়িতে না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে সদর থানার ওসি জানান।