সোমবার সকালে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “এখনো সমঝোতার পথ খোলা আছে। সংলাপের জন্য বিরোধী দলীয় নেতা সরকারকে সময় দিচ্ছেন। সমঝোতা হলে হরতাল-অবরোধের আর প্রয়োজন হবে না।”
তবে সমঝোতা ছাড়া বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “দলের ভাইরাস নেতাদের মন্ত্রী বানালে বিএনপির কিছু হবে না। এরশাদের অনেককে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী বানিয়েছেন।
“তাকে বলব- রওশন এরশাদ, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, রুহুল আমিন হাওলাদারকে মন্ত্রী বানিয়ে একদলীয় নির্বাচন করে যাবেন, আর আমরা বসে বসে চকলেট খাবো। তা হবে না।”
সংকট নিরসনে সরকারকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে বলব- আপানাকে নমনীয় হতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে হবে।”
হরতাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডন করে ফারুক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতাকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, হরতালে মানুষ হত্যার কথা। এটা ঠিক নয়।
“প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ১৯৫-৯৬ সালের কথা। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তিনি ওই সময় ১৭৩দিন হরতাল-জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করেছেন। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। দেশের মানুষ ওইসব কথা ভুলে যায়নি।”
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। একমাস চলে গেছে, এখন ৬০ দিন বাকি আছে। এই হচ্ছে নির্বাচনের তফসীলের অবস্থা। তফসিল ঘোষণা না করে শুনেছি- তিনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।”
“আসলে আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারের কাছ থেকে নির্দেশ পাননি বলেই তফসীল ঘোষণা করতে পারছেন না।”
আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা ফারুক দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলোচনার কথা বলে সরকার আন্দোলনকে ‘বিভ্রান্ত’ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, “দুই মহাসচিবের মধ্যে বৈঠকের কথা বলে সরকার আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে আমাদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ওই বৈঠক অস্বীকার করেছেন।”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে প্রধান দুই দলের মুখপাত্র গত শনিবার রাতে বনানীর এক বাসায় একান্তে বৈঠকে বসেন বলে সংবাদ মাধ্যমের খবর। তবে তা নাকচ করেছেন মির্জা ফখরুল।
অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে সরকার এক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা বৈঠকের কথা জানালেও সৈয়দ আশরাফের কোনো বক্তব্য আসেনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ধানের শীষ সমর্থক ফোরামের উদ্যোগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও বিরোধী দলীয় নেতার বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি ও নির্দলীয় সরকার গঠনের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।
সংগঠনের সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, স্বাধীনতার ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নাগরিক সংসদের সভাপতি খালেদা ইয়াসমীন প্রমুখ বক্তব্য দেন