নির্বাচন পর্যন্ত সরকার চালিয়ে নিতে রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ”আমি সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে জানিয়েছি, আমরা সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্রপতি আমাকে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন।”
বুধবার নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের শেষ কার্যদিবসে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। বাংলার মাটিতে নির্বাচন হবে। নির্বাচন বানচাল করার মতো ক্ষমতা কারো নেই।”
শেখ হাসিনা বলেন, “কখনোই সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা পরিবর্তন হয়নি। প্রতিবারই জনগনের অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে। মূলকথা হলো, সংবিধান অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। ৩৮ বছরে মাত্র একবার ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। এছাড়া আর কখনো সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। একটি প্রক্রিয়া শুরু হোক, নির্বাচনের সময় মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে কষ্ট করতে হবে, যাতে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এটিই আমাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমরাও সেভাবে নির্বাচন করবো। আগামিতে যাতে কেউ ফাঁক ফোকর দিয়ে কোনভাবে অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় না আসতে পারে। আর চাই না, অসাংবিধানিকভাবে কেউ ক্ষমতায় আসুক, হত্যা, ক্যুর রাজনীতি আমরা চাই না।”
তিনি বলেন, সংবিধান মোতাবেক মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের সময় এসেছে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে বলেছি, আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। প্রত্যেক দেশে নির্বাচনের সময় যেভাবে রাষ্ট্রপ্রধানকে জানানো প্রয়োজন, সেভাবে জানিয়েছি। তিনি আমাকে অনুমতি দিয়েছেন, নির্বাচনচলাকালীন সময়ে সংসদ বহাল রাখা। আমরা একটি মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছি। যার আকার আরো ছোট।”
প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, “ইতোমধ্যে গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে। এ সরকার অর্ন্তবর্তীকালীন হিসেবে নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে। কোন মৌলিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। রুটিন কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্দেশনা মেনে চলতে সরকার বাধ্য থাকবে। সরকারী সুযোগ সুবিধা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করতে পারবে না।”
শেখ হাসিনা বলেন, ”আমরা চাই, আমরা অন্তত শুরু করে যাই, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া, যা আগামী দিনে চলতে থাকবে। বিরোধী দলকে বলেছি, নির্বাচন নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। সংসদে আমাদের সদস্য সংখ্যা বেশী। তবু অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারে বিরোধী দলকে নাম দিতে বলেছি, কোন মন্ত্রণালয় চান, তা বলেছি।”
তিনি বলেন, ”ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আছে। পূর্বের মতো নির্বাচনে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই। জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য পার্টি সাড়া দিয়েছে। বিরোধী দল আসলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হতাম। আমরা ভোটের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। আর নির্বাচনে কারচুপি হবে তা আমরা চাই না। আমাদের দুর্ভাগ্য শুধু বিরোধী দলের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি না।”
তিনি আরো বলেন, ”জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসার নিয়ত আমাদের নেই। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করেছি। তিনি নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে।”
এ সময় ”বাংলার মাটিতে নির্বাচন হবেই” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।’